রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

|

ভাদ্র ২৩ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

অস্ট্রেলিয়ার কথা বলে শ্রীলংকার টর্চারসেলে, মুক্তিপণ নিল ৭৬ লাখ টাকা!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১১:২৪, ৯ জুলাই ২০২৪

অস্ট্রেলিয়ার কথা বলে শ্রীলংকার টর্চারসেলে, মুক্তিপণ নিল ৭৬ লাখ টাকা!

প্রতীকী ছবি

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার ৪ যুবককে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর কথা বলে শ্রীলংকায় টর্চারসেলে রেখে নির্যাতন করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে মুক্তিপণ হিসেবে আদায় করা হয়েছে ৭৬ লাখ টাকা।

মুক্তিপণ দিয়ে দেশে ফিরে আসার পর প্রতারক দালাল চক্রের বিরুদ্ধে আড়াইহাজার থানায় মানবপাচার আইনে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী হাসিবুল হোসেনের পিতা মোবারক হোসেন মোল্লা।

বাকি ভিকটিমরা হচ্ছেন- একই এলাকার কাউসারের ছেলে হানিফ, স্বপনের ছেলে আ. আহাদ এবং শামীমের ছেলে সাকিব।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পাঁচরুখী এলাকার মোবারক হোসেন মোল্লার ছেলে হাসিবুল হোসাইনসহ তিনজনকে অস্ট্রেলিয়ায় নেওয়ার কথা বলে মিরপুর ১২নং সেকশনের বি ব্লকের ৪ নম্বর সড়কের ৭৪ নম্বর প্লটের স্বপন খেয়া ভবনের ৭ম তলার বাসিন্দা মল্লিক রেজাউল হক সেলিম ও তার সহযোগীরা তাদের কাছ থেকে নগদ ১৫ লাখ টাকা নেন। এরপর ২০২৩ সালের ২৬ মে হাসিবুলসহ তিনজনকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর কথা বলে বাড়ি থেকে নিয়ে যান।

প্রতারক চক্র ভিকটিমদের ভারতের চেন্নাই নিয়ে গিয়ে টর্চারসেলে আটক রেখে ভিকটিমদের পরিবারের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। পরবর্তীতে তাদের আবার চেন্নাই থেকে অস্ট্রেলিয়ায় নেওয়ার কথা বলে নিয়ে যায় শ্রীলংকায়। সেখানে নিয়ে আবার তাদের রাখা হয় প্রতারক চক্রের নির্ধারিত টর্চারসেলে।

শ্রীলংকায় দ্বিতীয় দফায় ভিকটিমদের আটক রেখে দৈহিক নির্যাতন করে ভিকটিমদের পরিবারের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা মুক্তিপণ আদায় করা হয়। মুক্তিপণ পাওয়ার পর ভিকটিমদের ছেড়ে দিলে শ্রীলংকার পুলিশের মাধ্যমে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়।

ভিকটিমরা দেশে আসার পর মামলার বাদী ভিকটিম হাসিবুল হোসাইনের পিতা মোবারক হোসেন সর্বশেষ গত ৩ মে মামলার ৬নং বিবাদী ইকবালের ভুলতা গাউছিয়া এলাকার বাড়িতে এক সমঝোতা বৈঠকে বসেন। বৈঠকে প্রতারকচক্র ভুক্তভোগীর পিতা মোবারক হোসেনকে চরম অপমান অপদস্থ ও হুমকি-ধমকি দেন। ক্ষতিপূরণ দেবে না বলেও জানান।

পরে মোবারক হোসেন বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জের মানবপাচার ট্রাইব্যুনালে ১৬ মে মল্লিক রেজাউল হক সেলিম, তার স্ত্রী বিউটি এবং মেয়ে সুচীসহ যাদের অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকা দেওয়া হয়েছে তাদের আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন; যা আদালতের নির্দেশে আড়াইহাজার থানায় রেকর্ড করা হয়।

এদিকে মামলা হওয়ার পর প্রায় দুই মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও প্রধান আসামি মল্লিক রেজাউল হক সেলিমকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আড়াইহাজার থানার এসআই রিপন জানান, মামলা গ্রহণের পর একজন আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। প্রধান আসামিসহ বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তাছাড়া মামলাটি সিআইডির সিডিউলভুক্ত হওয়ায় এর তদন্তভার সিআইডিতে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।