ইউপি চেয়ারম্যান আলী হোসেন ভূঁইয়া
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার হাইজাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী হোসেন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে যেনও স্থানীয়দের অভিযোগের শেষ নেই। ইউনিয়নের নলকূপ বসাতে, রাস্তা করলে, জমি বিক্রি করাসহ নানান কাজে তাকে দিতে হয় মোটা অংকের টাকা। এমনকি এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়া রাজাকার পরিবারের সদস্যদের ফিরিয়ে এনে তাদের দিয়ে নিজের আলাদা গুণ্ডা বাহিনী তৈরি করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও চেয়ারম্যান আলীর বিরুদ্ধে স্বর্ণ চোরাচালানের মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানাও জারি হয়েছিল। তবে অদৃশ্য কারণে সেই পরোয়ানা তামিল করতে পারে নাই পুলিশ।
রোববার (২৪ অক্টোবর) হাইজাদী ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দ্বিতীয় মেয়াদে ইউনিয়নটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন আলী হোসেন ভূঁইয়া। তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান। কিন্তু চেয়ারম্যান হয়ে তিনি সাধারণ জনগণ তো দুরের কথা স্থানীয় আওয়ামী লীগের যেই নেতাকর্মীরা তার জন্য কাজ করেছেন তাদের কাছেই টাকা ছাড়া কোনো কাজ করেন না।
অনুসন্ধানে জানা যায়, আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়ে চেয়ারম্যান হয়ে তিনি হয়ে যান এলাকার ত্রাস। ইউনিয়নের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে রয়েছে তার নিজস্ব লোকজন। যারা সকল কিছু নিয়ন্ত্রণ করেন তার হয়ে। নিজের দলের চেয়ারম্যানের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের সখ্যতা দেখে হতবাক স্থানীয় আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। চেয়ারম্যান আলীর কাছে টাকা ছাড়া কোনো সমস্যার সমাধান হয় না বলেও অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। গতবারের নির্বাচনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে তিনি দূরত্ব বাড়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আর সখ্যতা বাড়ান হাইব্রিড আওয়ামী লীগ ও বিএনপি-জামায়েতের নেতাকর্মীদের সাথে।
আরও জানা যায়, হাইজাদী ইউনিয়নের সরকারি হাসপাতালের পুকুর দখল করে মাছ চাষ, এলাকায় অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালুর কারবারি, এলাকায় বিয়ে হলে টাকা দিতে হয় তার লোকজনদের। বিয়েতে টাকা না দেওয়াতে বাল্য বিয়ে বলে বিয়ে বন্ধ করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। জমি বিক্রি করতে গেলেও চেয়ারম্যান মারফতে যেতে হয় বলেও অনেক স্থানীয়দের অভিযোগ।
হাইজাদী ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি আবু সিদ্দিক বলেন, আমাদের স্থানীয় নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করেন না চেয়ারম্যান। তিনি এখন হাইব্রিড আওয়ামী লীগদের নিয়ে চলে। তিনি নির্বাচিত হয়ে ইউনিয়নের মধ্যে যা শুরু করেছেন এতে করে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে তৃণমূলে। আমরা চাই এই চেয়ারম্যানের দুঃশাসন শেষ হউক।
আড়াইহাজার উপজেলা যুবলীগের সদস্য ও হাইজাদী ইউনিয়নের বাসিন্দা আওলাদ বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় হামলার শিকার হয়েছি, মামলা খেয়েছি, জেল খেটেছি আওয়ামী লীগ করি বলে, দলকে ভালোবাসি বলে। আমার দোকান ছিল বঙ্গবন্ধুর নামে সেই দোকানের জন্য মাইর খাইছি বিএনপির হাতে। তবে আজ আমার দল ক্ষমতায়। আমাদের ইউনিয়নের চেয়ারম্যানও আমাদের দলের তবে আমাদের কষ্ট লাগে যখন দেখি তিনি দলছুট বিএনপি-জামাতের লোক নিয়ে থাকেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করেন না।
নিজের বিরুদ্ধের সকল অভিযোগ ষড়যন্ত্রমূলক আখ্যা দিয়ে হাইজাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আমি সবসময় আমার জনগণের কল্যাণে কাজ করছি। আমি আমার দলের নেতাকর্মীদের ভালোবাসি, সম্মান করি।