নারায়ণগঞ্জে সনাতন ধর্মের মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মতিথিতে মহামারির জন্য সবকিছু স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে পূজা-আর্চনার মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) সনাতন ধর্মের মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মতিথি। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা এদিন মহাধুমধামে ও বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উদযাপন করলেও এ বছর করোনা মহামারির জন্য সবকিছু স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে পূজা-আর্চনার মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে।
এদিন মন্দিরগুলোতে দর্শনার্থীদের সীমিত ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। মন্দির প্রাঙ্গণগুলোতে ছিল স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা যে কয়েকজন এসেছেন তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ভগবানের উদ্দেশে প্রার্থনা করেছেন।
মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) মিশনপাড়াস্থ রামকৃষ্ণ মিশন ঘুরে দেখা গেছে, শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উৎসব ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসরণ করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মন্দির প্রাঙ্গণেই সীমিত পরিসরে পূজা-আর্চনার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে প্রত্যেক দর্শনার্থীকে স্যানিটাইজ করা হচ্ছে। মাস্ক ছাড়া দর্শনার্থীদের প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। মন্দির থেকে বার বার প্রচার করা হচ্ছে মাস্ক ছাড়া প্রবেশ করা যাবে না এবং মন্দির প্রাঙ্গণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
রামকৃষ্ণ মঠ বা মিশন সূত্রে জানা গেছে, শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে সকালে গীতা পাঠ অনুষ্ঠিত হয়েছে। অন্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ভজন, দুপুরে প্রসাদ বিতরণ, সন্ধ্যায় মহারাজের বাণীবচন ও রাতে শ্রীকৃষ্ণ পূজা। মন্দিরে প্রবেশে স্যানিটাইজ করাসহ আসন গ্রহণ ও প্রসাদ গ্রহণের সময় ভক্তদের স্বাস্থ্যগত ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও মাস্ক পরিধান আবশ্যক। তবে সব আয়োজন সীমিত পরিসরে হবে। পাশাপাশি কঠোর স্বাস্থ্যবিধির জন্য ভক্ত কম আসবে বলে মঠের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সনাতন ধর্মের উল্লেখযোগ্য প্রধান ধর্মীয় উৎসব শুভ জন্মাষ্টমী। শাস্ত্রমতে, দ্বাপর যুগের সন্ধিক্ষণে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেছিলেন ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে। তার জন্মতিথিকে জন্মাষ্টমী হিসেবে উয্যাপন করা হয়। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অনুসারে পাঁচ হাজার বছর আগে পাশবিক শক্তি যখন ন্যায়, নীতি, সত্য ও সুন্দরকে গ্রাস করতে উদ্যত হয় তখন সেই অশুভ শক্তিকে দমন করে কল্যাণ ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য অবতার হিসেবে শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটে। দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের জন্য যুগে যুগে ভগবান মানুষের মধ্যে অবতীর্ণ হন এবং সত্য ও সুন্দরকে প্রতিষ্ঠা করেন।
হিন্দু পঞ্জিকা মতে, ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে যখন রোহিণী নক্ষত্রের প্রাধান্য হয় তখন জন্মাষ্টমী পালিত হয়। উৎসবটি গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে প্রতিবছর মধ্য আগস্ট থেকে মধ্য সেপ্টেম্বরের মধ্যে কোনো এক সময়ে পড়ে।
নারায়ণগঞ্জ পোস্ট