প্রতীকী ছবি
নারায়ণগঞ্জের দেওভোগে ৫ খুনের দায়ে একমাত্র আসামি ভাগ্নে মাহফুজকে বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (০৬ ডিসেম্বর) বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ (ডেথ রেফারেন্স) অনুমোদন এবং আসামির আপিল খারিজ করে বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে আসামি পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি।
২০১৭ সালের ৭ আগস্ট আসামি মাহফুজকে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ হোসনে আরা আক্তার মৃত্যুদণ্ড দেন।
এরপর বিধান অনুসারে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো। পাশাপাশি আসামি আপিল ও জেল আপিল করেন।
২০১৬ সালের ১৬ জানুয়ারি রাতে শহরের দেওভোগের দুই নম্বর বাবুরাইল এলাকার বাসায় ওই পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পরদিন ১৭ জানুয়ারি সকালে নিহত তাসলিমার স্বামী শফিকুল ইসলাম তার ভাগ্নে মাহফুজের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। ঢাকার কলাবাগানের নাজমা ও শাহজাহানকে এ মামলার সন্ধিগ্ধ আসামি করা হয়। ওইদিন রাতেই মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, শফিকুল ও শরীফুল এক সময় ঢাকার কলাবাগানের এক বস্তিতে পরিবার নিয়ে থাকতেন। সেখানেই তাদের ভাগ্নে মাহফুজের সঙ্গে তার মামী লামিয়ার পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। পরে দুই ভাইয়ের পরিবার বাসা বদলে নারায়ণগঞ্জের বাবুরাইলে চলে যায়।
লামিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি জানাজানি হলে হত্যাকাণ্ডের ১৬ দিন আগে পারিবারিক সালিশে মাহফুজকে জুতাপেটা করা হয়।
ঘটনার পরদিন গ্রেপ্তার করা হয় মাহফুজ ও নাজমাকে। পরে ২১ জানুয়ারি আদালতে মাহফুজ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন, যা ছিল গা শিউরে ওঠার মতো। শফিকুলের ছোট ভাই শরীফুল ইসলামের স্ত্রী লামিয়ার সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের জেরে অবৈধভাবে শারীরিক মেলামেশা করতে না পারার ক্ষোভ থেকেই একে একে পাঁচজনকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেন ভাগ্নে মাহফুজ।
লামিয়া ছাড়া নিহত অন্য চারজন হলেন- লামিয়ার বড় জা তাসলিমা (৩৫), তাসলিমার ছেলে শান্ত (১০), মেয়ে সুমাইয়া (৫) ও ছোট ভাই মোরশেদুল (২২)।
জবানবন্দিতে মাহফুজ বলেন, চার স্বজনকে ঘুমন্ত অবস্থায় শিল দিয়ে আঘাত করেন এবং একজনকে দেয়ালে মাথা ঠুকে একাই হত্যা করেন তিনি।
তদন্ত শেষে মাহফুজকে একমাত্র আসামি করে পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। পরে বিচার শেষে তার মৃত্যুদণ্ড হয়।