শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

|

পৌষ ৬ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

লোক সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ নারায়ণগঞ্জে বাউল গানে যুক্ত হাজার শিল্পী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১৬:০৫, ১৩ জানুয়ারি ২০২৪

আপডেট: ১৬:৫২, ১৩ জানুয়ারি ২০২৪

লোক সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ নারায়ণগঞ্জে বাউল গানে যুক্ত হাজার শিল্পী

প্রতীকী ছবি

নারায়ণগঞ্জ শুধু ব্যবসা অর্থনীতি ও অন্যান্য দিকেই সমৃদ্ধ নয় সমৃদ্ধ লোক সংস্কৃতিতেও। নারায়ণগঞ্জে বাউল গান করে এমন ৪ শত বাউল রয়েছেন। তারা সকলেই একতাবদ্ধ। তাদের সাথে বাদ্যযন্ত্র বাজায় এমন রয়েছেন আরো ৪শত জন।

সব মিলিয়ে নারায়ণগঞ্জে১ হাজারের এর মত বাউল গানের সাথে সম্পৃক্ত লোক রয়েছে। এদের সবাই বাউল গানের সাথে যুক্ত এবং বাউল শিল্পী।

নারায়ণগঞ্জের বাউল নেতাদের একজন ফরিদ উদ্দিন বাধন জানান, এখানে প্রায় ১ হাজারের মত বাউল শিল্পী রয়েছেন। যারা বাউল গান করেন তারা এই গান গেয়েই অর্থ উপার্জন করেন এবং জীবিকা নির্বাহ করেন। আমাদের একটা চাওয়া সরকার কর্তৃক যে বাউল একাডেমি সেখানে আপামত জনসাধারণ যেন জানতে পারে বাউল গান সম্পর্কে।

বাউল গান বাংলার ঐতিহ্যবাহী লোকায়ত সংগীতের একটি অনন্য ধারা। এটি বাউল সম্প্রদায়ের নিজস্ব সাধনগীত। আবহমান বাংলার প্রকৃতি, মাটি আর মানুষের জীবন জিজ্ঞাসা একাত্ম হয়ে ফুটে ওঠে বাউল গানে। আরো ফুটে ওঠে সাম্য ও মানবতার বাণী। এ ধারাটি পুষ্ট হয়েছে পঞ্চদশ শতাব্দীর তান্ত্রিক বৌদ্ধ ধর্মের ভাব, রাধাকৃষ্ণবাদ, বৈষ্ণব সহজিয়া তত্ত্ব ও সুফি দর্শনের প্রভাবে। কোনো কোনো ইতিহাসবিদের মতে, বাংলাদেশে বাউল মতের উদ্ভব সতের শতকে। এ মতের প্রবর্তক হলেন আউল চাঁদ ও মাধব বিবি।

শহরে, গ্রামে ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে বাউলসংগীত। সব ধরনের শ্রোতাই মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করে বাউল গান। এ গানের অসম্ভব জনপ্রিয়তার পেছনে আছে এর সর্বজনীনতা, গভীর মানবিকতা বোধ। ইউনেসকো যে স্বীকৃতি বাউল গানকে দিয়েছে, তার অধিকাংশ কৃতিত্বই লালন সাঁইয়ের।

নব্বই দশকের মাঝামাঝি যখন বিশ্বায়নের হাওয়া লাগল বাংলাদেশে, তার পরের কয়েক বছর বাউল গানের অন্ধকার যুগ। হিন্দী ধুমধাড়াক্কা আর এমটিভির অশ্লীল বন্যায় বাংলা গানের তখন হাসফাস অবস্থা। দু’একটা উল্লেখ করার মত ঘটনা অবশ্যই ঘটেছে। ফিড্ ব্যাকের সঙ্গে আবদুর রহমান বয়াতীর যুগলবন্দীতে ‘মন আমার দেহঘড়ি সন্ধান করি/কোন মিস্তরী বানাইয়াছে’ – তারুণ্যের একনম্বর পছন্দের তালিকায় ছিল বেশ ক’ মাস। বাউল গানের সুন্দরীতমা চাঁদ ঢাকা পড়ে রইল অপসংস্কৃতির কালো মেঘে। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে সময় লেগেছে বেশ ক’বছর। তবে যে নতুন রূপে বাউল গানের প্রকাশ ঘটল একবিংশ শতাব্দীতে তার সঙ্গে তুলনা চলেনা আগেকার কোন সময়েরই।

ইউনেস্কো ২০০৫ সালে বিশ্বের মৌখিক এবং দৃশ্যমান ঐতিহ্যসমূহের মাঝে বাউল গানকে অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্পদ হিসেবে ঘোষণা করে।