
দ্বিগুবাবুর বাজার
নারায়ণগঞ্জে রমজানের শুরুতেই গরু, মুরগী ও খাসির মাংস সহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়েছে। এছাড়াও বাজারে সংকট দেখা গেছে সয়াবিন তেলের। বিক্রেতারা সরবরাহ কম দাবী করলেও ক্রেতারা বলছেন এ সংকট কৃত্তিম।
রোববার (১ মার্চ) নারায়ণগঞ্জের কালীরবাজার, দ্বিগুবাবুর বাজার ও মাসদাইর বাজার এলাকা ঘুরে এ দৃশ্য দেখা গেছে।
শহরের দ্বিগুবাবুর বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও মাথার মাংস প্রতি কেজি ৪৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বাজারগুলোতে। মাংসের দাম বাড়তি থাকায় গরুর মাথার মাংস কিনতে দেখা গেছে ক্রেতাদের। এছাড়াও বাজারে খাসির মাংস ১ হাজার ১৫০ থেকে ১২শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বরকির মাংস ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাংসের বাড়তি দামের ব্যাপারে জানতে চাইলে মাংস ব্যাবসায়ী জয়নাল জানান, রমজান আসার আরও দুই সপ্তাহ আগে থেকেই ব্যাপারিরা গরুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। আগের চেয়ে বর্তমানে গরু প্রতি বিশ হাজার টাকা দাম বেশি পড়ছে। তাই একটু বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
এছাড়াও বাজারে বাড়তি দাম দেখা গেছে মুরগীর মাংসের। সপ্তাহের ব্যাবধানে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বাড়তি দাম প্রায় সব জাতের মুরগীর। সোনালি মুরগী ৩৪০ টাকা কেজি, হাইব্রিড সোনালি ৩০০, লাল লেয়ার মুরগী ৩০০ ও ব্রয়লার মুরগী ২১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বাজারে।
বাজারে দাম বেড়েছে ডিমেরও। প্রতি হালি লালা ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকা হালি দরে। এছাড়াও হাঁসের ডিম ৭৩ টাকা ও দেশি মুরগীর ডিম ৯০ টাকা হালি দরে বিক্রি হচ্ছে।
শহরের কালীরবাজার এলাকা ঘুরে রমজানের নিত্য প্রয়োজনীয় শুকনো দ্রব্যাদির দাম কিছুটা বেশি দেখা গেছে। বাজারে প্রতি কেজি আদা ১৪০ থেকে ২৭০ টাকা, রসুন ১৩০ থেকে ২৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দাম বেড়েছে ডালের। মশুর ডাল ১৪০ টাকা, মুগ ডাল ১৭০ টাকা ও ছোলা বুট ১১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বাজারে।
এছাড়াও বাজারে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯২ থেকে ১৯৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজারের দোকানগুলোতে সয়াবিন তেলের সংকট দেখা গেছে। শহরের কালীরবাজার ও নিতাইগঞ্জ এলাকায় ঘুরে দোকানগুলোতে ক্রেতাদের চাহিদার তুলনায় সয়াবিন তেল কম দেখা গেছে।
দোকানিরা জানান, বাজারে বর্তমানে সয়াবিন তেলের সরবরাহ কম। এর ফলে দোকানে মাল কম। তবে আমরা বাড়তি দাম নিচ্ছি না। গায়ের দামেই তেল বিক্রি করছি।
এদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ অসাধু ব্যাবসায়ীরা অধিপ মুনাফার আশায় বাজারে কৃত্তিম সংকট তৈরির চেষ্টা করছে। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরেও বাড়তি লাভের আশায় তারা এখন তেল বিক্রি করছে না।
কালীরবাজারে রমজানের বাজার করতে আসা মোবারক হোসেন জানান, অন্যান্য মুসলিম দেশে রমজানে দ্রব্যাদির দাম কমে যায়। আমি মালয়েশিয়া থাকতে দেখেছি রমজান আসলে খাবারের জিনিসের দাম অর্ধেক হয়ে যায়। আমাদের দেশে খাবার দাম বেড়ে যায়। এসকল অসাধু সিন্ডিকেটের জন্য চাল, ডাল ও তেলের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এবিষয়ে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা জানান, উন্নত বিশ্বে রমজানের সময় নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমিয়ে দেয়া হয় যেন সকলে উৎসবটা পালন করতে পারে। কিন্তু আমাদের দেশে ঠিক উল্টোটি হয়। বছরের বাকি সময়টা তো সকলে মুনাফা করেই, রমজানে কেন সাধারণ মানুষ উৎসব পালন করতে পারবে না। এবার নারায়ণগঞ্জে কেউ যেন অতিমুনাফা করে জনগণের ভোগান্তি করতে না পারে সে লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন সচেষ্ট আছে। আমাদের মোবাইকোর্টগুলো রমজানের পুরো সময়জুড়েই নারায়ণগঞ্জের বাজারগুলো মনিটরিং করবে।