রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

|

ভাদ্র ২৩ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

জাফর ইকবালের বই পুড়িয়ে  দিয়েছে শিক্ষার্থীরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ২৩:২৭, ১৭ জুলাই ২০২৪

আপডেট: ২৩:২৭, ১৭ জুলাই ২০২৪

জাফর ইকবালের বই পুড়িয়ে  দিয়েছে শিক্ষার্থীরা

ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় লেখক জাফর ইকবালের লিখিত বেশ কয়েকটি বই পুড়িয়ে  দিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এসময় আমরা নই রাজাকার, জাফর ইকবালের উদ্দেশ্যে 'আমরা নই রাজাকার, জাফর ইকবাল স্বৈরাচার, জাফর ইকবাল রাজাকার, আমরা নই রাজাকার, জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে' সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন আন্দোলনকারীরা৷ বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুরে চাষাঢ়া গোলচত্বরে সমবেত হয়ে সড়ক অবরোধ করেন তারা। এসময় জাফর ইকবাল রচিত 'রাশা, বুবুনের বাবা' সহ ১৫-২০টি বই পুড়িয়ে স্লোগান দিতে থাকেন তারা।

প্রসঙ্গত, কোটা আন্দোলনকারীরা স্লোগানে নিজেদের রাজাকার দাবি করায় আর কখনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চাইবেন না বলে অতি সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন জনপ্রিয় লেখক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল।

এ বিষয়ে তার একটি লেখা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষের ওয়ালে ঘুরছে ওই লেখা।

মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীরের সন্তান জাফর ইকবাল লিখেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমার বিশ্ববিদ্যালয়, আমার প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়। তবে আমি মনে হয় আর কোনোদিন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চাইবো না, ছাত্র-ছাত্রীদের দেখলেই মনে হবে, এরাই হয়তো সেই রাজাকার।

তিনি আরও লিখেছেন, আর যে কয়দিন বেঁচে আছি, আমি কোনো রাজাকারের মুখ দেখতে চাই না। একটাই তো জীবন, সেই জীবনে আবার কেন নতুন করে রাজাকারদের দেখতে হবে?’

এর আগে কোটা সংস্কার চেয়ে ও আন্দোলনকারীদের উপর হামলার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ- অবরোধ পালন করেন শিক্ষার্থীরা। সকাল থেকে শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাঢ়া, বঙ্গন্ধু সড়কের ২নং রেলগেইট ও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের জালকুড়িতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ চালান কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় নগরীর চাষাঢ়া প্রেসক্লাবে সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সড়ক অবরোধ করে কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী। একপর্যায়ে তারা ২নম্বর রেলগেট এলাকায় জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে রেল লাইনের ওপর বসে পড়েন শিক্ষার্থীরা। পরে চাষাড়া মোড় যান চলাচল বন্ধ করে দিয়ে সেখানে অবস্থান নেন। বন্ধ করে দেওয়া হয় নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা অভিমুখে ট্রেন চলাচলও৷ কয়েকশত আন্দোলনকারীর অংশগ্রহণে চাষাঢ়া থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা কালীরবাজার প্রদক্ষিণ করে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।

এসময় আন্দোলনকারীরা স্লোগান দেন, ‘আমরা নই রাজাকার, তুই বেটা স্বৈরাচার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে, লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেবো না’, কোটা সংস্কার ও আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে তারা আরও নানা ধরনের বিভিন্ন স্লোগান দেন।

অন্যদিকে আরো শতাধিক বিক্ষোভকারী ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের জালকুরি এলাকায় সড়ক অবরোধ করে রাখেন সকাল দশটা থেকে।

নারায়ণগঞ্জ মহিলা কলেজের  শিক্ষার্থী আফসানা বলেন, শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে আমরা রাস্তায় নেমেছি। কোটা সংস্কার না করা পর্যন্ত আমরা সড়কে থাকবো ৷’

তোলারাম কলেজের আবিদ বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনে বিভিন্ন জায়গায় হামলা হয়েছে ৷ অনেকের প্রাণ গেছে। এ আত্মত্যাগ আমরা বৃথা যেতে দেবো না। সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবার আহ্বান জানাই সকলকে।’

দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে আজকের কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করেন আন্দোলনকারীরা৷ আগামীকাল সকাল এগারোটায় তারা ফের চাষাঢ়ায় জমায়েত হওয়ার ঘোষণা দেন৷

দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে আজকের কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করেন আন্দোলনকারীরা৷ এদিকে কোটা আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে চাষাড়ায় সড়কের মধ্যে যোহরের নামাজসহ গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে আন্দোলনকারীদের সাথে অংশ নেন স্থানীয় বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মীও।