ফাইল ছবি
দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনে পূর্ণাঙ্গ প্রশাসক নিয়োগ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ। তিনি বলেন, প্রথমে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে পূর্ণ সময়ের জন্য প্রশাসক দেওয়া হবে।
বুধবার বিকেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মিলনায়তনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় হাসান আরিফ এসব কথা বলেন। ঢাকা দক্ষিণ, ঢাকা উত্তর, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নাগরিক সেবা যথাযথভাবে নিশ্চিতকল্পে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
মেয়রদের অপসারণের পর দেশের সিটি করপোরেশনগুলোতে প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছিল সরকার। যাঁদের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে প্রশাসকের কাজ করছেন। নিয়মিত নগর ভবনে গিয়ে অফিস করছেন না। এতে জরুরি অনেক সিদ্ধান্ত যথাসময়ে নেওয়া, উন্নয়নকাজের তদারকি করাসহ সেবামূলক কাজে নানা বিঘ্ন ঘটছে। এমন প্রেক্ষাপটে উপদেষ্টা হাসান আরিফ আজ এ কথাগুলো বলেন।
মতবিনিময় সভায় রাস্তাঘাট মেরামত ও উন্নয়ন, জলাবদ্ধতা নিরসনে পয়োনালা ব্যবস্থাপনা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং মশকনিধন কার্যক্রমসহ সিটি করপোরেশনের দেওয়া সেবাসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হয়।
বাসাবাড়ি থেকে বর্জ্য সংগ্রহেরর কাজ নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় মারামারির ঘটনা ঘটছে বলে জানান সংস্থাটির কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, এলাকাভিত্তিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় নানা ধরনের সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
হাসান আরিফ আরও বলেন, ‘আমরা সিটি করপোরেশনগুলোর প্রতি নির্দেশনা দিয়েছি বর্জ্য সংগ্রহ নিয়ে এমন কোন্দল ও দখলদারত্ব দূর করতে আমরা শক্ত অবস্থানে যাব। প্রয়োজন হলে এ সমস্যা সমাধানে আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শরণাপন্ন হব। তবুও কোনোভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে, বর্জ্য সংগ্রহ নিয়ে এলাকাভিত্তিক দখলদারত্বের স্থান দেওয়া যাবে না।’
সড়কের পাশের ফুটপাত মেরামত জরুরি উল্লেখ করে হাসান আরিফ বলেন, ‘আমাদের ঢাকা শহরে ব্লক বা টাইলস দিয়ে ফুটপাত তৈরি করা হয়। কিছু দিন পরে সেই টাইলসের নিচের মাটি বা বালু সরে যায়। তখন সেই ফুটপাতের বিভিন্ন জায়গা দিয়ে আর চলাচল করা যায় না। দিনের পর ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় থাকে, ফলে পথচারীদের চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি হয়।’
এ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘ঢাকায় আরেকভাবে ফুটপাত করা হয় ঢালাইয়ের মাধ্যমে। মাঝেমধে৵ ইউটিলিটি সার্ভিস (বিভিন্ন পরিষেবা) দেওয়ার জন্য এসব ফুটপাত আবার খুঁড়ে ফেলতে হয়। এর ফলে সিটি করপোরেশন বা সরকারের নতুন করে ফুটপাত সংস্কারের বরাদ্দ দিতে হয়। এ কারণে সরকারের টাকা অপচয় হচ্ছে। এ জন্য ফুটপাত সংস্কারে সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলীরা নতুন কিছু চিন্তা করেন। যা দিয়ে এসব সমস্যার সমাধান করা যায় এবং উন্নয়নটা যেন দীর্ঘমেয়াদি হয়।’
আলোচনা সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম স্বাগত বক্তব্য দেন। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মাহমুদুল হাসান, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক এ এইচ এম কামরুজ্জামান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম প্রমুখ।