প্রতীকী ছবি
শরীর সুস্থ রাখতে প্রাথমিক শর্ত হলো সুষম আহার এবং পর্যাপ্ত ঘুম। শরীরের জন্য টানা আট ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন।
এর চেয়ে কম হলেই একাধিক সমস্যা দেখা দেয়। শরীর ক্লান্ত লাগে, মাথা ধরে থাকে, চোখের ওপর চাপ পড়ে। যদি পর্যাপ্ত আহার-ঘুমের পরও এই সমস্যা থেকে যায় তাহলে সাবধান। কারণ তা হতে পারে জটিল কোনো রোগের লক্ষণ। শরীরে ক্রমবর্ধমান কোনো রোগের প্রাথমিক লক্ষণও হলো এই ক্লান্তি!
সারাদিন যদি ক্লান্তবোধ হয় তাহলে অন্য কোনো কাজেও মন বসে না। বিরক্ত লেগে থাকে শরীরে। যদি দেখেন ডায়েটে পরিবর্তন এনেও কোনো কাজ হচ্ছে না তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। তার পরামর্শ নিন। জরুরি রক্ত পরীক্ষা করাতেও ভুলবেন না। এই ক্লান্তির কারণ যা কিছু হতে পারে—
হার্টের সমস্যা
অনেকক্ষণ ঘুমনোর পরও কিছুতেই কাটছে না ক্লান্তি। কোনো কাজের জন্যই জোর পাচ্ছেন না। এমন অবস্থা হলো কনজেস্টিভ হার্ট ফেইলিউরের একটি সাধারণ উপসর্গ। এই সমস্যায় হার্ট ঠিকমতো পাম্প করতে পারে না। ফলে আরও বেশি ক্লান্ত বোধ হয়। হাত-পায়ে ফোলা ভাব থাকে। শ্বাসকষ্টের সমস্যাও হতে পারে।
ডায়াবেটিস
ক্লান্তি ডায়াবেটিসের একটি সাধারণ উপসর্গ। এমন পরিস্থিতিতে শরীরে ক্রমাগত ক্লান্তি থাকে। অবিলম্বে সুগার পরীক্ষা করতে হবে। ডায়াবেটিস জিনগত কারণেও হতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা হয় লাইফস্টাইলের কারণে। ক্রমাগত রাত জাগা, মানসিক চাপ, শরীরচর্চা না করা আর ফাস্টফুড খাওয়া হলে সেখান থেকে রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়বেই। আর সুগার বাড়লে হাজারো ঘুমালেও ক্লান্তিভাব দূর হতে চায় না।
থাইরয়েড
বর্তমানে অনেকেই থাইরয়েডের সমস্যায় ভোগেন। সমস্যা হলো তা সঠিক সময়ে ধরা পড়ে না। থাইরয়েড হলো একটি ছোট, প্রজাপতি আকৃতির গ্রন্থি যা আমাদের ঘাড়ে থাকে। এখান থেকে তৈরি হয় থাইরয়েড হরমোন যা আমাদের বিপাক নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এমন পরিস্থিতিতে এই হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলে পুরো শরীরেই তার প্রভাব পড়ে। থাইরয়েড হলে ডিপ্রেশন, ক্লান্তি এসব খুবই স্বাভাবিক।
ডিপ্রেশন
ক্লান্তি থেকে আসতে পারে ডিপ্রেশনও। শরীরে ঘুমের চক্র ঠিক রাখতে সাহায্য করে সেরেটোনিন হরমোন। এই হরমোনের তারতম্য জনিত সমস্যা হলে সেখান থেকে ডিপ্রেশন আসতে বাধ্য। ডিপ্রেশন হলেই ঘুম আসে না, খেতে ইচ্ছে করে না। আবার এমন অনেকে আছেন যারা ডিপ্রেশনের মধ্যেই বেশি করে খাবার খান। তবুও কাটে না ক্লান্তি। সারাদিন ঘুম ঘুম ভাব লেগেই থাকে।
অ্যানিমিয়া
অ্যানিমিয়ার সমস্যাতেও ক্লান্তি, দুর্বলতা লেগে থাকে। রক্তে যে আয়রন থাকে তা শরীরের সর্বত্র অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত সরবরাহ করে। ফুসফুস থেকে শরীরের সর্বত্র অংশে রক্ত সঞ্চালন করতে সাহায্য করে এ আয়রন। শরীরে আয়রনের অভাব হলেই মাথা ঘোরা, দুর্বল লাগা, হার্টবিট বেড়ে যাওয়া এ সমস্যা হয়।