ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার ও বিকেএমইএ’র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার নারায়ণগঞ্জে বিকেএমইএ’র প্রধান কার্যালয়ে বিকেএমইএ’র নেতৃবৃন্দের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিকেএমইএ’র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, সহ-সভাপতি অমল পোদ্দার, সহ-সভাপতি (অর্থ) মোরশেদ সারোয়ার সোহেল, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ রাশেদ।
সৌজন্য সাক্ষাতে বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, বাংলাদেশ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারগুলোতে জিএসপি সুবিধার আওতায় সর্বোচ্চ রপ্তানি করে। তবে ২০২৬ সালে বাংলাদেশ নিম্ন আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হলে এ সুবিধা হারাতে হবে কিন্তু এমন পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশ এখনও প্রস্তুত না। তাই বাংলাদেশ সরকার যদি এলডিসি উত্তরণ পিছিয়ে দিতে চায়, সেক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগিতা কামনা করেন সভাপতি।
এছাড়াও বিগত এক দশকে পোশাক শিল্পে বাংলাদেশের উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাখ্যা করে এবং এইচআরডিডিডি আইনের প্রতি রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিকেএমইএ’র সভাপতি বলেন, আমাদের উপর আইনটির বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু বায়াররা সে অনুযায়ী ন্যায্য দাম দিতে ইচ্ছুক নয়। ফলে এটি এক ধরনের চাপ তৈরি করছে আমাদের উপর। অর্থাৎ বায়াররা অনৈতিক ক্রয়াদেশের চর্চা করছে যা কাম্য নয়, পণ্যের ন্যায্য দাম পাওয়ার বিষয়ে রাষ্ট্রদূতের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠন একেক রধনের কোড অব কন্ডাক্ট মেনে চলার শর্ত আরোপ করে। এটি ব্যয়বহুল এবং বিপত্তিকর। ফলে একটি নির্দিষ্ট কোড অব কন্ডাক্টের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন বিকেএমইএ সভাপতি।
সর্বোপরি এলডিসি পরবর্তী বাংলাদেশের অবস্থা, নারীর ক্ষমতায়ন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর আর্থ সামাজিক উন্নয়নের কথা বিবেচনায় রেখে ভবিষ্যতেও ইইউ এই সুবিধা বাংলাদেশের জন্য বজায় রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি শামীম এহসান, ২০২৬ সালে এলডিসি উত্তরনের পর আরও অন্তত ছয় বছর জিএসপি সুবিধা বজায় রাখতে রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে ইউরোপের দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। একইসাথে জনাব এহসান এ দেশের তৈরি পোশাক খাতকে প্রস্তাবিত জিএসপি আইনের আর্টিকেল ২৯ এর সেফটি মেজারের আওতাভুক্ত না করার জন্য রাষ্ট্রদূতের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বাংলাদেশের পোশাক কারখানায় বিদ্যমান বিভিন্ন পরিবেশ সংক্রান্ত পদক্ষেপ বর্ননা করেন, এবং নতুন শ্রম আইন যে আগের তুলনায় আরো অনেক শ্রম বান্ধব হবে তা উল্লেখ করেন ।
বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য সম্পর্ক ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, এ দেশের সাথে একটি মসৃন সম্পর্ক বজার রাখতে তিনি তার পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা অব্যাহত রাখবেন। এছাড়াও শ্রমমান কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছালে বাংলাদেশের জিএসপি প্লাস পাওয়ার সম্ভাবনার কথা জানান।
এছাড়াও রাষ্ট্রদূত নারায়ণগঞ্জে বিকেএমইএ’র সদস্য কারখানা ইপিলিয়ন নীটওয়্যারস লি. ও মেট্রো মিটিং ও ডাইং লি: পরিদর্শন করেন এবং বিদ্যমান কর্মপরিবেশের প্রশংসা করেন।
পরিচালক তারেক আফজাল, আব্দুল হান্নান, জাকারিয়া ওয়াহিদ, মিনহাজুল হকসহ আরও অনেকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।