বুড়িগঙ্গার তীরে অবস্থিত যে এলাকাটি বর্তমানে 'ফতুল্লা' নামে পরিচিত তা একসময় 'পরগনা' নামে পরিচিত ছিল। বর্তমানে ফতুল্লা নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার অন্তর্গত একটি ইউনিয়ন যার নামকরণের পেছনে একটি বিস্তৃত ইতিহাস রয়েছে। যা সাক্ষী দিয়ে যাচ্ছে সমসাময়িক রাজনীতিরও।
চতুর্দশ শতাব্দীর প্রায় প্রথম দিকে ফিরোজ শাহ্ বাংলা অঞ্চল নিজ দখলে নেন। এরই সাথে বাংলা অঞ্চলে হিন্দু রাজত্বের অবসান ঘটে এবং শুরু হয় তুঘলক বংশের শাসনামলের। বাংলা অঞ্চলে তুঘলক সম্রাজ্যের শাসন শুরু হওয়ার পাশাপাশি মুসলিম শাসনের সূচনাও হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন অঞ্চল হতে মুসলিম ধর্ম প্রচারকরা ধীরে ধীরে বাংলার দিকে আসতে থাকেন। তেমন একজন ধর্ম প্রচারক হলেন শাহ্ ফতেউল্লাহ্। চতুর্দশ শতাব্দীর শুরুর দিকে দিল্লি থেকে বাংলায় আসেন শাহ্ ফতেহউল্লাহ্। আফগানিস্তানের বাগদাদ অঞ্চলে আদি নিবাস ছিল এই আধ্যাত্মিক সাধকের। বাংলায় আসার পর তামাম বাংলায় ইসলাম ধর্মের প্রচার করতে থাকেন তিনি। এরই এক পর্যায়ে বুড়িগঙ্গার তীরে পরগনা নামক স্থানে স্থায়ী ভাবে অবস্থান করতে থাকেন তিনি। পরে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর বুড়িগঙ্গার তীরে সমাধিস্থ করা হয় এই আধ্যাত্মিক সুফি সাধককে।
মহান আধ্যাত্মিক সুফি সাধকের স্মৃতিতেই তখন 'পরগনা' নামক এই এলাকার নাম বদলে 'ফতেউল্লাহ' করা হয়। কালের বিবর্তনে সেই 'ফতেউল্লাহ' নামই এখন 'ফতুল্লা' নামে পরিনত হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ পোস্ট