ফাইল ছবি
তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ থেকে পদত্যাগ করেছেন একজন সহসভাপতি ও একজন পরিচালক। বিকেএমইএ’র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমকে ফ্যাসিস্টদের দোসর আখ্যায়িত করে তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সংগঠনের নির্বাহী সভাপতি বা প্রশাসনিক সমন্বয়কারী বরাবরে পদত্যাগপত্র দাখিল করেন সিনিয়র সহসভাপতি মনসুর আহেমদ ও পরিচালক খুরশিদ আহমেদ তনিম।
ওই পদত্যাগপত্রে মোহাম্মদ হাতেমসহ বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের বেশ কয়েকজন সিনিয়র পরিচালক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জুলাই আগস্ট বিপ্লবে সম্পৃক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এছাড়াও পদত্যাগপত্রে আগামী ৫ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ইজিএমও বাতিল করার দাবি জানান তারা।
পদত্যাগ করা মনসুর আহমেদ মাদার কালার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। অপরদিকে খুরশিদ আহমেদ তনিম লেক্সেল নিট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
পদত্যাগপত্রে তারা উল্লেখ করেন ‘বর্তমান সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমের নেতৃত্বে সংগঠনের মূল্যবোধ ও নৈতিক মানদণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি বর্তমান নেতৃত্বের অধীনে এমন কিছু কর্মকাণ্ড ঘটছে যা আমাদের সংগঠনের মূলনীতি- ন্যায়পরায়ণতা, সততা এবং গণতান্ত্রিক চর্চা লঙ্ঘন করছে।’
গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে পাওয়া তথ্যের বরাতে সংগঠনের এ দুই পরিচালক বলেন, ‘বর্তমান সভাপতি এবং কিছু সিনিয়র বোর্ড সদস্যরা ফ্যাসিজমকে সহযোগিতা করেছে এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও সাধারণ ছাত্র-জনগণের ওপর নির্যাতনকারী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে জড়িত ছিলেন।’ তারা আগামী ৫ ডিসেম্বরে ডাকা সংগঠনের বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) ও বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) বাতিলের আহ্বান জানান।
তারা আরও বলেন, ‘মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে এবং আমাদের বিবেকের তাড়নায়, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে যারা এই ফ্যাসিবাদকে সমর্থন করে তাদের সঙ্গে আর কাজ করব না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, আমি আজকে ঢাকায় ছিলাম। এ ধরনের চিঠি এখনো হাতে পাইনি।
মোহাম্মদ হাতেমের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সে সময় বেশিরভাগ ব্যবসায়ীই সরকারের বিরুদ্ধে কোন কিছু বলার সাহস করেনি। মনসুর সাহেব হয়তো কোন কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে পদত্যাগপত্র দাখিল করেছেন। এ বিষয়টি নিয়ে আমরা বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনা করবো। আশা করছি মনসুর সাহেব তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করবেন।
এজিএম স্থগিতের বিষয়ে তিনি বলেন, হাইকোর্টের আদেশে এজিএম অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখন এজিএমের তারিখ পরিবর্তন করতে হলে হাইকোর্টের আদেশ লাগবে। এটা এখন সম্ভব নয়।
এ বিষয়ে বিকেএমইএ’র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আমি বিগত দিনে এই ট্রেডের জন্য কি করেছি সেটা এই সেক্টরের লোকজন সকলেই জানে। আমাদের বিকেএমইএ’র সদস্যরাও জানে। নারায়ণগঞ্জের লোকজন জানে। বর্তমান অর্ন্তবর্তী সরকারের লোকজনও জানে। আমার সবকিছু ক্লিয়ার। আমি কখনোই বিগত সরকারের দোসর ছিলাম না। যদি দোসরই থাকতাম তাহলে আরো আগেই সভাপতি হতাম। এছাড়াও নিয়ম অনুযায়ী পদত্যাগপত্র সভাপতি বরাবর করতে হয়। কিন্তু তারা সেটা করেননি।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিকেএমইএর সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করেন সাবেক এমপি সেলিম ওসমান। এরপর সভাপতি নির্বাচিত হন মোহাম্মদ হাতেম।