ফাইল ছবি
বাংলাদেশে ব্যবসা করা কতটা কঠিন ও বেদনাদায়ক, তা একজন প্রকৃত উদ্যোক্তাই জানেন। একটি প্রতিষ্ঠান দাঁড় করানো, টিকিয়ে রাখা এবং সেই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করা—এটি শুধু অর্থনৈতিক লড়াই
নয়, এটি একজন উদ্যোক্তার জীবনের প্রতিটি মুহূর্তের আত্মত্যাগ। কিন্তু যখন সেই প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের মুখে পড়ে, তখন এটি শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির নয়, গোটা সমাজের জন্যই ক্ষতিকর।
আজ হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে, যখন শুনলাম মাহমুদ ডেনিমের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাফি মাহমুদকে তার প্রতিষ্ঠানের কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বেদম মারধর করেছে এবং তাকে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছে। এটি শুধুমাত্র দুঃখজনক নয়, আমাদের দেশের ব্যবসায়িক পরিবেশের এক ভয়ানক বাস্তবতা।
রাফি মাহমুদ এবং তার পরিবার নিজেদের বাড়ি বিক্রি করেও শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করার চেষ্টা করছেন। অথচ তারাই আজ তাকে মারধর করেছে। মাহমুদ ডেনিম ১৮ বছর ধরে কত মানুষকে কর্মসংস্থান দিয়েছে, দেশের অর্থনীতিতে কত অবদান রেখেছে, কিন্তু আজ সেই প্রতিষ্ঠানই ধ্বংসের পথে।
একজন ফ্যাক্টরি মালিকের জীবনযাত্রা সহজ নয়। তাকে ব্যাংকের ঋণের চাপ, কাস্টমস-বন্ডের ঝামেলা, বায়ারের চাপ, শ্রমিকদের প্রত্যাশা—সব সামলে একটি প্রতিষ্ঠান চালিয়ে নিতে হয়। অথচ এই ত্যাগ-তিতিক্ষার কোনো মূল্যায়ন হয় না। রাফি মাহমুদ যদি অন্যায় করতেন, তবে তিনি শ্রমিকদের সামনে গিয়ে দাঁড়াতেন না। তিনি দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার মতো সহজ পথ বেছে নিতে পারতেন। কিন্তু তিনি লড়াই করছেন।
সময়ের দাবি: আজ মাহমুদ ডেনিমের যা হলো, কাল তা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সাথে হতে পারে। আমরা কি এইভাবে আমাদের বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হতে দেব? আমরা কি এভাবে উদ্যোক্তাদের মনোবল ভেঙে দেব? দেশের শিল্পকে বাঁচাতে এবং শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক উন্নত করতে এখনই আমাদের সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
একজন উদ্যোক্তা হিসেবে আমার মন ভেঙে গেছে। তবুও আমি বিশ্বাস করি, সঠিক সমাধান এবং সচেতনতা আমাদের এই ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতি থেকে বের করে আনতে পারে। আসুন, একসাথে ভাবি এবং কাজ করি।