ফাইল ছবি
নারায়ণগঞ্জের আলীগঞ্জে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকল্পের কাজে বাধা দিয়ে আবার আলোচনায় আসেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা মনির।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) নারায়ণগঞ্জের আলীগঞ্জ মাঠে গণপূর্ত অধিদপ্তরের অধিনে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ১৫ তলা বিশিষ্ট ৮টি ভবন নির্মাণের এক প্রকল্পে, যেখানে প্রায় ৬৭২টি ফ্ল্যাট হবে, ৬ বছর ধরে কাজ চলা এই প্রকল্পে হঠাৎ নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা মনির বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
প্রকল্পের আওতাধীন আলিগঞ্জ গুদারা ঘাট থেকে আলীগঞ্জ প্রধান সড়ক পর্যন্ত একটি শাখা রাস্তার কাজ চলছিল, যা দীর্ঘদিন ধরে আলীগঞ্জ হাই স্কুলের ছাত্র, এলাকাবাসী ও নদীর পানগাঁও এর পাশের মানুষের দাবি ছিল। এই দাবির প্রেক্ষিতে স্কুলের সীমানা প্রাচীর ঘেষে প্রকল্পের আগ দিয়ে আলীগঞ্জ প্রধান সড়ক থেকে একটি রাস্তা আলীগঞ্জ গুদার ঘাট পর্যন্ত নির্মাণাধীন ছিল কিন্তু হঠাৎ করে ফাতেমা মনির এসে প্রকল্পের নিয়োজিত নির্মাণ শ্রমিকদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে শুরু করে এবং এই জায়গা নিজের বলে দাবি করে। এই সময় ফাতেমা মনির জোর খাটিয়ে কাজ বন্ধ করে দিতে চায় কিন্তু আলীগঞ্জ হাইস্কুলের ছাত্র-ছাত্রী, এলাকাবাসী প্রশাসনের হস্তক্ষেপে প্রকল্পের কাজ চলমান থাকে।
প্রকল্পের ইঞ্জিনিয়ার সাইফুল ইসলাম বলেন, এখানে স্কুলের সীমানা প্রাচীর এবং আমাদের প্রকল্পের মাঝখানে নির্মাণ শ্রমিক এবং কর্মচারীদের জন্য দুটি শেড ছিল প্রায় ছয় বছর ধরে। পরবর্তীতে গুদারা ঘাট থেকে প্রধান সড়ক পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রী ও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে রাস্তা নির্মাণের দাবি আসে এই দাবীর প্রেক্ষিতে প্রকল্পের জায়গার উপর দিয়েই সরকার রাস্তা নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেয়।
তিনি বলেন, চার মাস আগে আমরা আমাদের সেডটি ভেঙে ফেলি, এখানে রাস্তা নির্মাণের জন্য এবং আমরা রাস্তার কাজ শুরু করে ঢালাইর কিছু কাজ করি হঠাৎ করে ফাতেমা মনির নামে এক মহিলা এসে আমাদের নির্মাণ শ্রমিকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে এই জায়গা তার বলে দাবি করে। আমরা ফাতেমা মনিরের সাথে তার কাগজপত্র নিয়ে বসি কিন্তু তার কাগজে দাগ নাম্বার ১৯৪/২৫২ পর্চা অপরদিকে আমাদের জায়গার দাগ নম্বর ১৯৪ যা গণপূর্তের ১০০বছর আগে অধিকৃত জায়গা, এখানে ফাতেমা মনিরের জায়গার কোন উল্লেখ নেই এবং তার জায়গার সাথে এই জায়গার দাগ নম্বর মিলে না। কিন্তু তিনি গায়ের জোর খাটিয়ে মহিলা হওয়ার সুযোগের অসৎ ব্যবহার করে শ্রমিক এবং মিস্ত্রিদের কাজে বাধা দেয়। পরবর্তীতে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী এলাকাবাসীর হস্তক্ষেপে আমরা কাজ চালিয়ে যাই এবং পুলিশ ফাতেমা মনিরকে ওই জায়গা থেকে নিয়ে যায়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধি তরিকুল ইসলাম পিয়াস বলেন, আমার বাড়ি মধ্য আলিগঞ্জ। আজ দীর্ঘদিন ধরে আলিগঞ্জ প্রধান সড়ক থেকে গুদারাঘাট পর্যন্ত রাস্তাটির বেহাল দসার কারণে এলাকাবাসী ছাত্র-ছাত্রী এবং নদীর অপর পাশে পানগাঁও এলাকার সাধারণ মানুষ এবং রোগীদের যাতায়াত দূরহ হয়ে গিয়েছিল, সবার দাবির প্রেক্ষিতে এই রাস্তার কাজটি চলমান ছিল হঠাৎ করে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা মনির রাস্তার কাজ বন্ধ করতে চায় এবং সরকারি জায়গাকে নিজের জায়গা বলে দাবি করে যা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। অবশেষে আলীগঞ্জ হাই-স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী এবং আমরা এলাকাবাসী সবাই মিলে সরকারি কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য সহযোগিতা করি।
পিয়াস আরো বলেন, আমরা ফাতেমা মনিরের সরকারি কাজে এরকম অবৈধ হস্তক্ষেপের দ্রুত তদন্ত এবং বিচার দাবি করছি।