যুবসমাজের পাহারা
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে সাম্প্রতিক সময়ে বেড়েছে চোর-ডাকাতের উপদ্রব। পাশাপাশি শেখ হাসিনার পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর দুর্বিত্তরা সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হামলা ও অগ্নিসংযোগ করায় নিরাপত্তার জন্য কাজ করতেন পারছেন না পুলিশ। এর ফলে এলাকায় এলাকায় বেড়ে গেছে চুরি-ডাকাতি।
এদিকে সিদ্ধিরগঞ্জের ১ থেকে ১০ নং ওয়ার্ডের সব এলাকায় চুরি-ডাকাতি ঠেকাতে গত তিনদিন রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন এই থানা এলাকার যুবসমাজ। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসানো হয়েছে নিরাপত্তা চৌকি। রাত ১১ টার পর থেকে কেউ এলাকায় প্রবেশ অথবা বের হলে তাদেরকে আগে তল্লাশি করা হয়। এছাড়া সকল যানবাহনও তল্লাশি করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাত ১১ টা থেকে ভোর ৫ টা পর্যন্ত সিদ্ধিরগঞ্জের প্রায় প্রতিটি এলাকায় প্রায় হাজারের অধিক যুবক বিভিন্ন পয়েন্টে পাহারা দেন।
সেই সঙ্গে চুরি-ডাকাতি ঠেকাতে হ্যান্ডমাইক দিয়ে সবাইকে সচেতন থাকার অনুরোধ করেন। যুবসমাজের এই প্রশংসনীয় উদ্যােগে এলাকার মধ্যে বর্তমানে স্বস্থি কাজ করছে।
এলাকায় দায়িত্বরত যুবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নিজ দায়িত্ববোধ থেকেই আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। যতদিন পর্যন্ত চুরি-ডাকাতির শঙ্কা থাকবে ততোদিন আমরা রাত জেগে এই দায়িত্ব পালন করে যাবো। পাশাপাশি অত্র এলাকায় সন্দেহভাজন বা কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে এলাকাবাসী সহজেই যেনো তা আমাদের জানাতে পারে সেজন্য আমরা কয়েকটি কন্ট্রোল নাম্বার খুলেছি। ফোন পাওয়া মাত্রই আমরা ঘটনাস্থলে চলে যাবো। এই এলাকা আমাদের। তাই দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে।
এদিকে এমন উদ্যোগের কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রশংসায় ভাসছেন সকলে ।
পাইনাদি নতুন মহল্লার যুবক ফয়সাল বলেন, দেশের এই পরিস্থিতিতে যুব-সমাজের দায়িত্ব নিতে হবে। এলাকায় চোর ডাকাতের উপদ্রব বেড়েছে। তাদের প্রতিহত করার জন্য আমরা তরুনরা আমাদের এলাকা পাহাড়া দিচ্ছি। এই দেশ আমাদের তাই নিরাপত্তাটাও এখন আমাদের দিতে হবে।
কলশী বিল্ডিং এলাকার যুবক রবিউল বলে, আমাদের এদিক দিয়ে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক রয়েছে। যেকোনো সময় এদিক দিয়ে গাড়ি নিয়ে এলাকায় ডাকাতি বা হামলা চালাতে পারে। তাই এই প্রবেশ মুখ গুলোতে আমরা চেকপোস্ট বসিয়েছি। প্রতিটি যানবাহনকে আমরা চেকিং এর মাধ্যমে এলাকায় প্রবেশ করতে দিচ্ছি ঠিক একই ভাবে চেকিং এর মাধ্যমে আমরা যানবাহন বাহিরে যেতে দিচ্ছি।
সিদ্ধিরগঞ্জের ব্যবসায়ী হাবিব সরকার বলেন, গত কয়েকদিন সিদ্ধিরগঞ্জে বেশ কিছু ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। যেহেতু রাস্তায় পুলিশ নেই তার জন্য আমরা খুব আতঙ্কে ছিলাম। এখন আমাদের যুব সমাজ সারা রাত নিরাপত্তার কাজ করছে। এতে আমাদের জনমনে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে।