শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

|

পৌষ ৬ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

পুলিশের গুলিতে শিক্ষার্থী তাইম হত্যার বিচারের দাবিতে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১৬:০৪, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পুলিশের গুলিতে শিক্ষার্থী তাইম হত্যার বিচারের দাবিতে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ

ফাইল ছবি

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ছাত্র ইমাম হাসান তাইম হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে আদমজী নগর এম ডব্লিউ কলেজের শিক্ষার্থীরা। 

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টায় নারায়ণগঞ্জের ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের মৌচাক এলাকায় মহাসড়কের সর্বমুখী লেন বন্ধ করে এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে শিক্ষার্থীরা। 

এসময় ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে মৌচাক থেকে কাঁচপুর এবং চট্টগ্রামমুখী লেনে মৌচাক থেকে সাদ্দাম মার্কেট পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে তীব্র ভোগান্তিতে পড়েছে যাত্রীরা। অনেকে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে রওনা দিয়েছে।

এদিকে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নারায়নগঞ্জ সরকারি আদমজী নগর এম. ডব্লিউ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইমাম হাসান তাইমকে হত্যার দেড় মাস পরেও কেন হত্যাকারী পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। এই হত্যার বিচারের দাবি তারা মহাসড়ক বন্ধ করে দেয়। 

এমডব্লিউ কলেজের শিক্ষার্থী হালিমা আক্তার তিশা জানায়, আমরা তামিম হত্যার বিচার দাবিতে এখানে মানববন্ধন করেছি। আমরা জানি যাত্রাবাড়ি থানা সকল কার্যক্রম এখন ডেমরা থানায় স্থানান্তর করা হয়েছে। আমরা সেখানে গেলে আমাদের ডিসি অফিস পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানে আমাদের কোন দাবিই মানা হচ্ছে না।  আমরা ডিসিকে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিলেও ২ দিন পার হয়ে যায়। তাই তাদেরকে চাপ প্রয়োগ করতে আমরা সড়ক অবরোধ করেছি। আমাদের দাবি যদি মানা না হয় তাহলে আমরা এখানেই অবস্থান করবো। 

আরেক শিক্ষার্থী রাকিব বলেন, ইমাম হাসাম তাইম আমার ভাই। তাকে পুলিশ কত নির্মমভাবে মারলো তা আমরা সবাই দেখেছি। কিন্তু তার খুনিকে কেন এখনো ধরতে পারলো না প্রশাসন আমরা এর জবাব চাই। আমার রাজপথ দখল করেছি। আমরা ভাইয়ের খুনিকে না গ্রেপ্তার করা পর্যন্ত আমার রাজপথ ছাড়বো না। পুলিশ ও জেলা প্রশাসক আমাদেরকে নানা ধরনের আশ্বাস দিয়ে হয়রানি করেছে। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবেই।

উল্লেখ্য, পুলিশের গুলিতে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের উপপরিদর্শক মো. ময়নাল হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে নারায়নগঞ্জ সরকারি আদমজী নগর এম. ডব্লিউ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইমাম হাসান তাইমকে হত্যার অভিযোগে ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সরকার গত ২০ জুলাই কারফিউ জারি করে। ওইদিন দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল ছিল। ওই সময় তাইম তার দুই বন্ধুর সাথে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় চা পান করতে যায়। ওই সময় কোটা আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ করছিল। তখন ইকবাল হোসেন, শামীম ও তানজিল আহমেদের নির্দেশে জাকির হোসেন ও তার সঙ্গীরা বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট ও গুলি চালায়। প্রাণভয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা ছোটাছুটি করতে থাকে। তাইম ও তার দুই বন্ধু লিটন চা দোকানের ভেতর ঢুকে শাটার নামিয়ে দেয়। কিন্তু শাটারের নিচের দিকে আধা হাত খোলা ছিল। সেখানে অবস্থানকারীদের পুলিশ টেনে বের করে। জাকির হোসেন গুলি থেকে বাঁচতে চাইলে দৌড় দিতে বলে। তখন তাইম সবার আগে দৌড় দেয়। জাকির তারপর গুলি করে। তাইম ঘটনাস্থলে বিনা চিকিৎসায় মারা যায়।