
প্রতীকী ছবি
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার ছোট ফাউসা গ্রামে ওরসকে কেন্দ্র করে স্থানীয় দুটি পক্ষের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ওরসকে ঘিরে দুই পক্ষের মাঝে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করেছেন গ্রামবাসী।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ওরস বন্ধের দাবী জানিয়ে গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল ওরস বন্ধ করতে জেলা প্রশাসনের বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে আবেদন জানায়।
স্মারকলিপি প্রদানকালে তারা অভিযোগ করে বলেন, গ্রামে ওরসের নামে গান-বাজনা, মাদক, জুয়ার আসর ও অসামাজিক কার্যকলাপ সংগঠিত হচ্ছে। পাঁচ আগষ্ট স্বৈরাচারের পতনের পর তৌহিদী জনতার প্রতিরোধের মুখে এসকল অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধ হয়ে গেলেও তারা পুনরায় এসকল মাজার চালু করছে। এর ফলে স্থানীয় যুবকেরা মাদকসহ বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ছে।
জানা গেছে, এর আগে এ ওরসকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে স্থানীয় দুই পক্ষের মাঝে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে এখন পর্যন্ত অন্তত দুজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে মনির ও আবু তৈয়ব নামে দুজন রয়েছেন। দুই পক্ষের মাঝেই চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোন সময় বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে।
আড়াইহাজার উপজেলা হেফাজতে ইসলামের সভাপতি মাওলানা আইয়ুব ফাউসা গ্রামের বাসিন্দা। এখানে দীর্ঘদিন যাবৎ জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই ওরসটি চললেও বর্তমানে হেফাজত নেতা আইয়ুব ওরসটি গ্রামে আর হতে দিতে চাইছেন না।
অন্যদিকে আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক লাভলুর ভগ্নিপতি মনিরের সাথে ওরসের আয়োজক শাহীনের দীর্ঘদিন যাবৎ দ্বন্দ চলে আসছিল। ওরসকে ঘিরে বর্তমানে মাওলানা আইয়ুবের সাথে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক লাভলু গ্রুপ এবং শাহীনের অনুসারীদের সাথে বিএনপি নেতা জয়নাল আবেদীন গ্রুপের সমর্থকেরা অবস্থান নিয়েছেন। এর ফলে পুরো গ্রামে এই ওরসকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। উল্লেখ্য লাভলু ও জয়নাল আবেদীন উভয়েই বিএনপির সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী।
এবিষয়ে জানতে চাইলে আড়াইহাজার হেফাজতে ইসলামের সভাপতি মাওলানা আইয়ুব হোসেন জানান, আমরা গ্রামবাসী এ ব্যাপারে ওসি, ইউএনও, ডিসির কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছি এটি বন্ধ করে দেয়ার ব্যাপারে। দ্রুত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ না নিলে যেকোন অঘটন ঘটতে পারে।
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেনের জানান, এখানে ওরস নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে। আমরা স্থানীয়ভাবে উভয় পক্ষকে নিয়ে বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করছি। মাদক কিংবা কোন প্রকারের অসামাজিক কার্যকলাপে কেউ জড়িত না থাকলে ওরস বা যেকোন ধরনের অনুষ্ঠান পালনে বাধা নেই।
আড়াইহাজারের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ সাজ্জাত হোসেন জানান, আমরা এ বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নই, কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ করেনি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আমরা অবশ্যই ব্যাবস্থা নেবো। মাদক সহ যেকোন অসামাজিক কার্যকলাপের ঘটনার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যাবস্থা নিতে আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বলা রয়েছে। অভিযোগ পেলে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।