
সংগৃহীত
বছরের পর বছর সংস্কার না হওয়ায় ঝু্ঁকিপূর্ণ ও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে নারায়ণগঞ্জের নবীগঞ্জ-মোগড়াপাড়া সড়ক। বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দগুলো যেন পরিণত হয়েছে মরণ ফাঁদে। প্রায় সময় ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা।
নারায়ণগঞ্জের বন্দর ও সোনারগাঁ উপজেলার সংযোগ সড়ক নবীগঞ্জ-মোগড়াপাড়া রাস্তাটির বেহাল অবস্থা দীর্ঘদিনের। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত থাকায় এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শহর, বন্দর, সোনারগাঁ ছাড়াও দেশের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ এবং ছোট বড় দশ হাজারের অধিক যানবাহন চলাচল করে। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, রাস্তাজুড়েই বড় বড় গর্ত আর খানাখন্দ। পিচ উঠে গেছে অধিকাংশ স্থানে। অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত ষোল বছর ধরে কোনো ধরণের সংস্কার হয়নি সড়কটির। ফলে সোয়া সাত কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রাস্তাটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ ও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় হতাহতের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বিভিন্ন যানবাহনও।
গত ১৬ বছর ধরে এই রাস্তার কোনো সংস্কার হয়নি। যে কারণে রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী এবং ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। আমি প্রতিদিন এই রোড দিয়ে বাইক নিয়ে চলাচল করি। রাস্তার বড় বড় গর্তের কারণে আমার বাইকের পার্টস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দুদিন পর পর গ্যারেজে নিয়ে মেরামত করতে হয়। আমরা চাই অতি দ্রুত রাস্তাটি সংস্কার করা হোক।
ফিরোজ মিয়া নামে এক সিএনজি চালক আক্ষেপ করে বলেন, ‘রাস্তার কথা, আর কি কমু। একটু পর পর গর্ত। এই গর্তগুলোর কারণে যেই ঝাঁকুনি খাই তাতে পুরা শরীর ব্যথায় অচল হয়ে যায়। একদিন গাড়ি চালালে দুদিন বিমছানায় পড়ে থাকতে হয়। রাস্তায় যেই বড় বড় গর্ত হয়েছে, বর্ষাকালে এসব গর্তে ইরি ধান চাষ আর তেলাপিয়া মাছ চাষ করা যাবে। এর বেশি বলার কিছু নেই। বলেও কোনো লাভ নেই। গত ষোল বছরে অনেক বলেছি। আজ পর্যন্ত সরকারের কোনো সংস্থা রাস্তার কাজ করেনি।’
সাবিনা বেগম নামে এক নারী বলেন, ‘এই রাস্তায় প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটছে। গর্তে চাকা পড়ে রিকশা উলটে শিশু বাচ্চা ও গর্ভবতী মায়েরা আহত হচ্ছেন। বছরের পর বছর রাস্তার এই অবস্থা। কিন্তু ঠিক করার কোনো উদ্যোগ নেই।’
মোঘল আমলে নির্মিত গ্র্যান্ড ট্রাংক রোড নামে খ্যাত ঐতিহাসিক এই সড়কটি সংস্কারের অভাবে এখন হারাতে বসেছে পাঁচ শতাধিক বছরের প্রাচীন ঐতিহ্য। দ্রুত দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারসহ সড়কটি প্রশস্ত করার দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।
তবে এরইমধ্যে সড়কটির সংস্কারের দরপত্র মূল্যায়ন প্রক্রিয়া ও ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানান নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদূর রহিম। অনুমোদন চূড়ান্ত হলেই সংস্কার কাজ শুরু করার আশ্বাস দিয়েছেন এই কর্মকর্তা।