রোববার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫

|

চৈত্র ২৮ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

সিদ্ধিরগঞ্জে ট্রিপল মার্ডার, ৩ জনকে আসামি করে মামলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১৯:৫৪, ১২ এপ্রিল ২০২৫

সিদ্ধিরগঞ্জে ট্রিপল মার্ডার, ৩ জনকে আসামি করে মামলা

ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে স্ত্রী ও শিশু সন্তানসহ তিনজনকে হত্যার পর লাশ টুকরো টুকরো করে মাটিচাপা দিয়ে গুমের ঘটনায় মামলা হয়েছে। নিহত লামিয়া আক্তারের বড় বোন মুনমুন আক্তার (৩২) বাদী হয়ে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় নিহত লামিয়ার স্বামী গ্রেফতার ইয়াছিন আলীসহ (২৪) তিন জনকে আসামি করা হয়েছে।

অপর আসামিরা হলেন- ইয়াছিন আলীর বাবা দুলাল মিয়া (৫০) ও মিজমিজি এলাকার তরুণী মোসাম্মৎ শিমু (২৭)।

মামলার বিষয়টি শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে সময় সংবাদকে নিশ্চিত করেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনু আলম।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত পাঁচ বছর আগে মিজমিজি পশ্চিমপাড়া এলাকার ইয়াছিনের সাথে লামিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর ইয়াছিন মাদকাসক্ত হয়ে কোনো কাজ কর্ম না করে ভবঘুরে হন।  স্ত্রী সন্তানের কোনো ভরণ-পোষণও দিতেন না ইয়াছিন। ফলে লামিয়া নিজের ও সন্তানের খরচ চালাতে সিদ্ধিরগঞ্জ পুল এলাকায় মুজিব ফ্যাশন নামে একটি পোশাক কারখানায় হেলপার হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর থেকে যৌতুক বাবদ টাকার দাবিতে লামিয়ার স্বামী ইয়াছিন ও শ্বশুর দুলাল মিয়া লামিয়াকে মারধরসহ নানা ভাবে নির্যাতন করে আসছে।

মামলায় বাদী আরও উল্লেখ করেন, মাদকাসক্ত স্বামী ইয়াছিনের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে লামিয়া চার বছরের শিশু সন্তান আব্দুল্লাহ ও অরতিবন্ধী বড় বোন স্বপ্না আক্তারকে নিয়ে একই এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে আলাদা বসবাস শুরু করেন। সেখানে গিয়েও ইয়াছিন লামিয়াকে টাকার জন্য চাপ দেয়। লামিয়া টাকা দিয়ে অস্বীকৃতি জানালে ইয়াছিন তাকে হুমকি দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৭ এপ্রিল সকাল থেকে লামিয়ার মোবাইল ফোন বন্ধ পেয়ে বাদী মুনমুন আক্তার বোনের খোঁজ নিয়ে তার ভাড়া বাসায় যান। সেখানে গিয়ে ঘরের দরজায় তালাবদ্ধ দেখেন। পরে আত্মীয় স্বজনের বাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করলেও লামিয়া, আরেক বোন স্বপ্না ও লামিয়ার ছেলে আব্দুল্লাহর খোঁজ পাওয়া যায় নি।

চারদিন নিখোঁজ থাকার পর শুক্রবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে ভাড়া বাসার সামনের রাস্তায় মাটি খুঁড়ে লামিয়া, স্বপ্না ও শিশু আব্দুল্লাহ খন্ড বিখন্ড লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

মামলার বাদী মুনমুন আক্তারের অভিযোগ, আসামি ইয়াছিনসহ অন্যরা পরিকল্পিতভাবে লামিয়াসহ তিন জনকে হত্যা করে লাশ টুকরো টুকরো করে মাটির নীচে পুঁতে রেখে গুম করে। আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তিসহ সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এই তিন হত্যাকান্ডের ন্যায়বিচার দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার (ওসি) শাহীনুর আলম সময় সংবাদকে বলেন, ‘তিন হত্যাকান্ডের ঘটনায় গ্রেফতার ইয়াছিনসহ তিন জনকে আসামি করে হত্যা মামলা হয়েছে। নিহত লামিয়ার বড় বোন মুনমুন আক্তার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছন।’

ওসি আরও বলেন, আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসামি ইয়াছিন আলীকে দশ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে জেলা আদালতে প্রেরণ করেছি। এছাড়া মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারে থানা পুলিশের একাধিক টিমের অভিযান চলছে।’