মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

|

কার্তিক ৬ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

অস্ত্রসহ নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের ৪ নেতা গ্রেপ্তার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১৪:০৩, ৬ নভেম্বর ২০২৩

অস্ত্রসহ নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের ৪ নেতা গ্রেপ্তার

ছাত্রদলের ৪ জন গ্রেপ্তার

নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জে মহাসড়কে অবরোধ, গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও নাশকতার সাথে জড়িত ঘটনায় ককটেল,পেট্রোলবোমা ও আগ্নেয়াস্থসহ জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ সভাপতি সুলতানসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সোমবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা রাসেল।

গ্রেপ্তাররা হলেন- জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ সভাপতি সুলতান মাহমুদ, রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব মাসুদুর রহমান, সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আরিফ বিল্লাহ ও দাউদপুর ইউনয়ন ছাত্রদল নেতা তৌহিদ হাসান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ২৮ অক্টোবর থেকে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের নিদের্শনায় গ্রেপ্তাররা ঢাকাসহ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজার থানাধীন মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ, গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগসহ নাশকতা করে আসছিল। ৬ নভেম্বর ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রূপগঞ্জ থানার একটি চৌকস টিম রুপগঞ্জ থানাধীন দাউদপুর ইউনিয়নের কাজিরবাগ এলাকার জনৈক সাইফুল ইসলামের দোতলা বাড়ি থেকে ১২টি ককটেল, ১০টি পেট্রোল বোমা, ০১টি বিদেশী পিস্তল ও ম্যাগজিনসহ তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা রুপগঞ্জ ও আড়াইহাজার থানায় বিএনপি ও জামায়াতের হরতাল ও অবরোধে গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের পরিকল্পনায় ও ঘটনায় জড়িত বলে স্বীকার করে। তাদের মোবাইলের সংরক্ষিত ম্যাসেজ, কথোপকথন, ছবি ও ভিডিও পর্যালোচনা করে জড়িত থাকার প্রমান পাওয়া যায়। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় নাশকতার একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের সাথে জড়িত অন্যান্য সহযোগী ও হুকুমদাতাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।

এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় গ্রেপ্তার ও পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সংবাদ সম্মেলনে এসপি বলেন, গত ২৮ তারিখ বিএনপির সমাবেশ হয়েছিল পল্টন এলাকায়। সেদিন কাকরাইলসহ আশেপাশের এলাকা রণক্ষেত্রে পরিনত হয়। সেখানে আমাদের একজন পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরের দিন সারা দেশে হরতাল দিয়ে যে নৈরাজ্য, তারা গাড়িতে আগুন দিয়েছে। পরবর্তীতে তিন দিনের অবরোধে নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশে গাড়ি পোড়ানো ও সহিংসতার ঘটনা দেখেছি। রূপগঞ্জে একটি কভার্ডভ্যানে আগুনসহ যে ভাংচুর ও নৈরাজ্য পাশাপাশি আড়াইহাজারের পাচরুখী এলাকায় পুলিশের ওপর হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় আমরা ভিডিও দেখে নিশ্চিত হয়েছি এসকল ঘটনায় সরাসরি কারা জড়িত। অনেকেই এর সাথে জড়িত। রূপগঞ্জ থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুলতান মাহমুদ ও মাসুদুর রহমান মাসুদ, আরিফ ও তৌহিদকে গ্রেফতার করেছে। তাদের কাছ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র আমরা পেয়েছি।

জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, তারা যে গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে এর সাথে তাদের বিএনপির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ সরাসরি সম্পৃক্ত। জেলা বিএনপির প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারাও এর সাথে জড়িত। মোবাইলে আমরা তাদের যোগাযোগ পেয়েছি। সেখানে মেসেজ অপশনে দেখেছি ২৮ তারিখের পরবর্তী গাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় নির্দেশনা পেয়েছি।

ওদের জিজ্ঞাসাবাদের পর তথ্য নিয়ে দাউদপুর এলাকায় একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ১২ টি ককটেল ও ১০ টি পেট্রোলবোমা উদ্ধার করলাম।  সুলতান, আরিফ, ও মাসুদসহ ওদের সাথে ছিল জেলা ছাত্রদলের আবু মাসুম। এছাড়াও আরও কয়েকজনের নাম আমরা পেয়েছি।

ঢাকার আশেপাশের জেলাগুলোতে এই যে আগুন সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটছে আমাদের এ এলাকায়ও তারা এগুলো করেছে এবং ভবিষ্যতেও তারা ব্যাপক ভাবে এগুলো করার মহাপরিকল্পনা নিয়েছিল। আমরা মনে করি এটা আমরা প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়েছি।

তিনি আরো বলেন, আমরা জানমালের নিরাপত্তার জন্য কাজ করছি। নারায়ণগঞ্জে অনেকে কিছু করতে না পারলে ঢাকায় করার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। আবার ঢাকা থেকেও এখানে ঢুকতে পারে। তাই এসকল নাশকতা ঠেকাতে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

আরো পড়ুন