একজন ব্যক্তির ব্যক্তিগত জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনার দায় কখনো নেবেনা বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল। আর এ কারণে নারায়ণগঞ্জে সম্প্রতি জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ সভাপতির পরকীয়ায় ঘটনায় তার স্ত্রীর আত্মহত্যার ঘটনায় বিব্রত সংগঠনটি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ সভাপতি মোহাম্মদ উল্ল্যাহর পরকীয়ায় একাধিকবার বাধা দিলেও সে সরে না আসায় শেষ পর্যন্ত তার সামনেই শরীরে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে স্ত্রী শামীমা (৩৩)। এ ঘটনায় পুরো জেলা ছাত্রদলজুড়ে আলোচনা সমালোচনা চলছে। তবে জেলা ছাত্রদলের দায়িত্বশীলরা জানিয়েছেন, কোন ব্যক্তির অপকর্মের দায় সংগঠন বহন করবেনা।
৪ আগস্ট ভোরে শামীমা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এর আগে ২৬ তারিখ রাতে সে স্বামীকে পরকীয়া প্রেমিকার বাড়ি থেকে ধরে এনে তার সামনেই শরীরে আগুন ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করে সে।
শামীমা ফাতেহপুর ইউনিয়নের দক্ষিনপাড়া গ্রামের ইমান আলী মেম্বারের মেয়ে। জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ সভাপতি মোহাম্মদ উল্ল্যাহ উপজেলার শিবপুর থানা সংলগ্ন হালিম মোক্তারের ছেলে। সে উপজেলার আনোয়ারার মেয়ে রোজিনার সাথে দীর্ঘদিন ধরেই পরকীয়ায় লিপ্ত বলে নিহতের ভাই থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবু দাবি করেছেন। রোজিনার স্বামী মালয়েশীয়া প্রবাসী।
এদিকে জেলা ছাত্রদলের শীর্ষ নেতারা এ ঘটনায় বিব্রত এবং কেউই এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি নন। তাদের সকলের মতে, এটি ব্যক্তি বিশেষের অপকর্ম যা কোন সংগঠন কখনোই দায় নেবেনা।
হাবিবুর রহমান হাবু জানান, এর আগেও একাধিকবার পরকীয়া করায় মোহাম্মদ উল্ল্যাহকে সতর্ক করেছিল শামীমা। এর আগেও ৩ বার আত্মহত্যার চেষ্টা করে স্বামীকে এ পথ থেকে ফেরাতে চায় শামীমা। সর্বশেষ ঈদের আগে ২৬ তারিখ রাতে সে স্বামীকে রোজিনার ঘর থেকে পরকীয়ারত অবস্থা থেকে ধরে নিয়ে আসে। পরে স্বামীর সাথে এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে রাতে সে শরীরে দুবার আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানের ডাক্তাররা জানায় তার দেহের ৪০ শতাংশ পুরোই পুড়ে গিয়েছিল। ৪ আগস্ট ভোরে সে মারা যায়।
এদিকে মৃত্যুর পর বিএনপির অনেকেই বিষয়টি নিজেদের মধ্যে মিমাংসা করার জন্য চাপ দিচ্ছে বলে জানা যায়।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনি জানান, আমার বিষয়টি জানা নেই। তবে যদি এরকম ঘটে ঘটে থাকে তাহলে তো সেটির ব্যক্তির নিজস্ব ব্যাপার, আর কারো ব্যক্তিগত জীবনে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনার দায় তো অবশ্যই সংগঠন নেবেনা।
এ ব্যাপারে মোহাম্মদ উল্ল্যাহ বলেন, অভিযোগ সত্য নয়। দূর্ঘটনাবশত তার দেহে আগুন লেগে যায়। পরে আমি দ্রুত তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি।
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, কেউ আমাদের এখানে লিখিত কোন অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নারায়ণগঞ্জ পোস্ট