শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

|

অগ্রাহায়ণ ৬ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

দোকানদার বললেন, আপনি খোরশেদ ভাই না?

প্রকাশিত: ০৬:১১, ৮ আগস্ট ২০২০

আপডেট: ০৬:০০, ৩০ নভেম্বর ১৯৯৯

দোকানদার বললেন, আপনি খোরশেদ ভাই না?

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত কাউন্সলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খরশেদের টিমের একজন শুভাকাঙ্ক্ষীর লাশ দাফন করে ফেরার পথে ক্লান্ত সকলেই পথে নামেন চা খেতে। সেখানে হটাত এক দোকানদার তাকে দেখে বলে উঠেন, আরে আপনি খোরশেদ ভাই না? 

সকলের কাছে এখন তিনি পরিচিত ‘খোরশেদ ভাই’। করোনাকালীন সংকটে আলোচনায় আসেন তিনবারের নির্বাচিত এ কাউন্সিলর। বিগত দিনে বিএনপির রাজনীতি করতে গিয়ে বার বার কারাবরণ করে কদাচিৎ আলোচনায় থাকলেও এবার সেটা নারায়ণগঞ্জ থেকেও ছাড়িয়ে গেছে দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে বহিবিশ্বেও।

দেশের অনেক এলাকার মানুষও যে তাকে চিনেছেন সেটাও উঠে এসেছে খোরশেদের একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে। এতে তিনি লিখেছেন, ‘সকল প্রশংসার মালিক আল্লাহ রাব্বুল আল-আমীন। আজ (৬ আগস্ট) আমাদের এক শুভাকাংখী করোনায় আক্রান্ত হয়ে ল্যাবএইড হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। তাকে দাফন করতে তার গ্রামের বাড়ী কিশোরগঞ্জের কটিয়াদিতে যাওয়ার পথে নরসিংদির শিবপুর উপজেলার একটা বাজারে চা পান করার জন্য যাত্রা বিরতি করি। যে দোকানে চা অর্ডার দেই, সেখানে চা নেই।

ফিরে আসার সময় দোকান মালিক ডেকে বলেন, আমি আপনার সব কাজের খবর রাখি। তাঁর আন্তরিকতায় অবশেষে চা না খেয়ে তার দোকারে রেডিমিক্স কফি খাই আমরা চারজন। ফেরার কফির দামও রাখেনি অনেক বলার পরেও। তার নাম রিপন খন্দকার, এই বাজার কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক।

গাড়ীতে ফিরতে ফিরতে ভাবলাম আল্লাহ চাইলে মানুষকে কিভাবে সম্মানিত করতে পারে। আমি বা আমরা কি বা করতে পেরেছি? সব তো আল্লাহ রাব্বুল আল-আমীন আমাদের করার তৌফিক দিয়েছেন বলে করতে পেরেছি।আল্লাহর দরবারে শোকরিয়া।

এর আগের স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, আজ ৬ আগষ্ট বৃহস্পতিবারটিম খোরশেদ ও টাইম টু গিভের শুভাকাংখী বিশিষ্ট গার্মেন্টস ব্যাবসায়ী বাবুল খান (৬৫) করোনা আক্রান্ত হয়ে ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। টিম খোরশেদ মরহুমের মরদেহ তার গ্রামের বাড়ী কিশোরগঞ্জের কটিয়াদিতে নিয়ে গোসল, কাফন, জানাযা ও দাফন সম্পূর্ণ করেছি। রাত ৪ টায় আমরা নারায়ণগঞ্জে ফিরে এসেছি। আলহামদুলিল্লাহ। আমরা তার রুহের মাগফেরাত কামনা করি। আজ টিমে ছিলেন রাসা রহমান, খন্দকার নাইমুল আলম, হাফেজ শিব্বির, আনোয়ার হোসেন, রাফি, রিয়াদ ও লিটন মিয়া।

জানা যায়, প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৩ নং কাউন্সিলর ও মহাগর যুবদলের সভাপতি মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। মানুষকে সচেতন করা থেকে শুরু করে যাবতীয় কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন তিনি। দল মত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জন্যই একজন নিবেদিত মানুষ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।

নারায়ণগঞ্জে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধির পরেই প্রথমবারের মত হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করে বিতরণ, মাস্ক বিতরণ, সরকারি ত্রাণ বিতরণ, ব্যক্তিগত ত্রাণ বিতরণ, টেলি মেডিসিন সেবা, সবজি বিতরণ, ৩০ পার্সেন্ট ভর্তূকি মূল্যে খাদ্য বিতরণ, ভর্তূকি মূল্যে ডিম বিতরণ, প্লাজমা ডোনেশন, অক্সিজেন সাপোর্ট সহ নানা কার্যক্রম করে যাচ্ছেন টিম খোরশেদ। 

সেই সাথে খোরশেদ ঘোষণা দেন নারায়ণগঞ্জে করোনা উপসর্গ কিংবা এ রোগে কেউ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করলে দাফনের ব্যবস্থাা করবেন। এরপর থেকেই তিনি একের পর এক লাশের কাফন দাফন সম্পন্ন করে চলছেন। নিজ ধর্মালম্বীদের পাশাপাশি অন্য ধর্মালম্বীদেরও লাশের সৎকার করে যাচ্ছেন মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। যা নিয়ে দেশের পাশাপাশি বর্হিবিশে^ও আলোচনায় চলে এসেছে। তাকে নানা উপাধিতে ভূষিত করে যাচ্ছেন। কেউ বলছেন, ‘মানবতার ফেরিওয়ালা’ কেউ বলছেন ‘হিরো অব করোনা’।

আর কাউন্সিলর খোরশেদের এই কাজের পিছনে রয়েছেন কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী। যারা কাউন্সিলর খোরশেদের সাথে সাথে নিজেদের জীবন বাজি রেখেও আল্লাহর খুশি করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। খোরশেদের সাথে সাথে তারাও পরিবার পরিজন বিচ্ছিন্ন থেকে ক্লান্তিহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। দিন কিংবা রাত যে কোনো সময় ফোন আসার সাথে সাথেই তারা ছুটে যাচ্ছেন। অনেক সময় কাউন্সিলর খোরশেদেও অনুপস্থিাতিতেও তারা কাজ করে যাচ্ছেন।

নারায়ণগঞ্জ পোস্ট