রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

|

ভাদ্র ২৩ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

সরকারী আশ্রয় কেন্দ্রে সেলিম ওসমান, শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য উপহার নিয়ে যাবেন বৃহস্পতিবার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ২৩:০৭, ১৪ জুলাই ২০২৪

সরকারী আশ্রয় কেন্দ্রে সেলিম ওসমান, শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য উপহার নিয়ে যাবেন বৃহস্পতিবার

ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের চৌধুরীবাড়ি গোদাইল এলাকায় অবস্থিত সরকারী আশ্রয় কেন্দ্র। যেখানে সরকারীভাবে পথশিশু ও ভিক্ষুকদের ধরে এনে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। ভিক্ষা ভিত্তি বন্ধে ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে তাদেরকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়ে এখানে রাখা হয়, আর পথশিশুদের ক্ষেত্রে তাদেরকে প্রশাসনের মাধ্যমে এনে এখানে রাখা হয় পরবর্তীতে যদি তাদের সঠিক অভিভাবক পাওয়া যায় তাদেরকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। যতদিন তাদের অভিভাবক পাওয়া না যায় ওই সকল শিশুরা এখানে থেকেই খাওয়া দাওয়া, লেখাপড়া এবং প্রশিক্ষন পেয়ে থাকেন। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা কমিটির সভাপতির পদে দায়িত্বে রয়েছেন নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক। প্রয়োজনের তুলনায় সরকারী অর্থ বরাদ্দ খুবই অপ্রতুল। তাই নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানকে আমন্ত্রন জানিয়ে ছিলেন প্রতিষ্ঠানটি একবার ঘুরে দেখার জন্য।

জেলা প্রশাসনের আমন্ত্রনে সারা দিয়ে রোববার ১৪ জুলাই দুপুরে সরেজমিনে প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শন করেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও ব্যবসায়ী নেতা এ.কে.এম সেলিম ওসমান। এ সময় তিনি প্রায় ৩০ মিনিট প্রতিষ্ঠানটির ভেতরে অবস্থান করেন। ভেতরে থাকা বৃদ্ধ ও শিশুদের সাথে কথা বলেন। 

প্রতিষ্ঠানটির উপ সহকারী পরিচালক মীর মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান এর সাথে আলোচনা করে প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামোগত সংস্কারে কি কি প্রয়োজন তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এ সময় তিনি আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা বৃদ্ধ ও শিশুদের সাথে প্রায় ১৫ মিনিট সময় ধরে কথাবার্তা বলেন। তাদের খাবার সহ তারা পড়ালেখা করতে ইচ্ছুক কিনা, কি ধরনের কাজে তাদের আগ্রহ রয়েছে এসব বিষয়ে তাদের সাথে খুটিনাটি আলাপ করেন সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান।

এ সময় তিনি শিশুদের কাছে জানতে চান তাদেরকে এমপি সেলিম ওসমান একদিন রান্না করে এনে খাওয়াবে, তারা কি খেতে চায়। শিশুরা এমপি সেলিম ওসমানকে বলেন তারা খাঁসির মাংস দিয়ে ভাত খেতে চায়। সেই মোতাবেক আগামী বৃহস্পতিবার রাতে এমপি সেলিম ওসমান তাদেরকে রান্না করা খাবার নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। সেই সাথে তাদেরকে একসেট করে নতুন পোশাক উপহার দিবেন বলেও জানান। এ সময় শিশুরা খুশিতে হাততালি দিয়ে আনন্দ প্রকাশ করে।

সরকারী আশ্রয় কেন্দ্রের উপ সহকারী পরিচালক মীর মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান জানান, বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে ১১৫জন পথ শিশু ও ৪০জন বৃদ্ধ ভিক্ষুক রয়েছে। শিশুদের মধ্যে বুদ্ধি ও মানসিক প্রতিবন্দী ২৭জন, বাক ও শ্রবন প্রতিবন্দী ১৪জন এবং শারিরীক প্রতিবন্দী ১৯জন। বৃদ্ধ ভিক্ষুকদের মধ্যে বুদ্ধি ও মানসিক প্রতিবন্দী ১০জন, বাক ও শ্রবন প্রতিবন্দী ৬জন, শারিরীক প্রতিবন্দী ৭জন রয়েছে। 

আশ্রয় কেন্দ্রের সবাইকে ৪ বেলা খাবার দেওয়া হয়ে থাকে। এর মধ্যে সকালের নাস্তা। দুপুরে সপ্তাহে তিন দিন মাছ, দুই দিন মাংস, ও দুই দিন ডিম দেওয়া হয়ে থাকে। রাতে সবজি ও ডাল। প্রত্যেক জনের খাবারের জন্য সরকার থেকে প্রতিদিন ১০০ টাকা করে বরাদ্দ পেয়ে থাকেন। আর প্রতি তিন মাসে একবার করে তাদের জন্য সরকার থেকে এক সেট নতুন পোশাক দেওয়া হয়। 

তিনি আরো জানান, এখানে শিশুদের জন্য একটি স্কুল ও মোক্তব রয়েছে। সেই সাথে তাদেরকে আপাতত সেলাই প্রশিক্ষন দেওয়া হয়ে থাকে। ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী সার্ভিসিং (টিভি, ফ্রিজ) এর প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা হবে, সরকার থেকে প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ আসলেই চালু করা হবে। তবে প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামোগত অবস্থা খুব নাজুক। শিশুদের থাকার ঘরের চাল ভেঙ্গে গেছে, বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে। প্রশিক্ষন কেন্দ্র সহ থাকার ঘর গুলো খুবই জরাজীর্ণ যে গুলো সংস্কার করা খুবই প্রয়োজন। ভবন গুলোর দেয়াল এতোটাই দুর্বল হয়ে গেছে যে শিশুরা বাথরুমের ভ্যান্টিলেটার ভেঙ্গে পালিয়ে যায়। যা দ্রুত সংস্কার করা খুবই জরুরি।

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান জানান, জেলা প্রশাসক মহোদয় আমাকে এখানে এসে দেখার জন্য আমন্ত্রন জানিয়ে ছিলেন। আমি ওনার আমন্ত্রনে এখানে এসেছি। ঘুরে দেখেছি। বাচ্চাদের সাথে কথা বলেছি। ওদের জন্য আমি আগামী বৃহস্পতিবার রান্না করা খাবার ও শিশুদের জন্য একসেট প্যান্ট ও শার্ট এবং বৃদ্ধদের জন্য একটি লুঙ্গি ও শার্ট উপহার হিসেবে নিয়ে আসবো। যেহেতু এলাকাটি আমার সংসদীয় আসনের আওতাভুক্ত নয়। সেহেতু এখানে সরকারী ভাবে কিছু করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু আমি একজন ব্যবসায়ী নেতা হিসেবে ব্যবসায়ী সংগঠন গুলো এবং ব্যবসায়ীদের সহযোগীতা নিয়ে আমি প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামোগত সংস্কার করার চেষ্টা করবো।