ফাইল ছবি
শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার খবরে নারায়ণগঞ্জের রাজপথে নেমে এসেছে হাজার হাজার মানুষ। জাতীয় পতাকা হাতে চলছে আনন্দ মিছিল। পাশাপাশি নানা বয়সের নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোর সবাই নেমে এসেছে রাস্তায়।
সোমবার (৫ আগস্ট) বিকাল ৩টার পর থেকে নারায়ণগঞ্জে চলছে বেপরোয়া হামলা-ভাঙচুর, লুটপাট ও ধ্বংসযজ্ঞ। শহরের জামতলায় শামীম ওসমানের বাসভবনে ঢুকে সব আসবাবপত্র একে একে নিয়ে যায় হামলাকারীরা। এরপর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। চাষাঢ়ায় সেলিম ওসমানের বাড়িতেও ভাংচুর লুটপাট চালানো হয়। ধরিয়ে দেয়া হয় আগুন।
আল্লামা ইকবাল রোডে শামীম ওসমানের ভাতিজা আজমেরি ওসমানের অফিসে ও ৭ তলা বাড়ি ভাঙচুর ও মালামাল নিয়ে যায় তারা। এ সময় ২টি গাড়ি ও ৭ টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। তোলারাম কলেজের মোড়ে শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমানের অফিসেও ভাঙচুর ও মালামাল লুটে নেওয়া হয়।
এদিন শহরের নারায়ণগঞ্জ ক্লাব, রাইফেল ক্লাব, জেলা পরিষদ ভবনে শহরের বিভিন্ন মার্কেট বিপণি-বিতান, শো-রুম এ হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে। এছাড়া জেলা পুলিশ লাইন, বন্দর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হামলা ও ভাঙচুরের খবর পাওয়া গেছে।
স্থানীয়রা জানান, পুরো শহর এখন অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। খণ্ড খণ্ড গ্রুপ নিয়ে হামলা-ভাঙচুর লুটপাট চালাচ্ছে। ৯৯৯ বা প্রশাসনের কাছে সহযোগিতা চেয়েও পাওয়া যাচ্ছেনা বলে অভিযোগ করেন অনেকে।
সোমবার বিকাল থেকে নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা গেছে লোকে লোকারণ্য। শহরের প্রধান সড়ক বিবি রোডে ৩ কিলোমিটার জুড়ে মানুষ আর মানুষ। চাষাড়া বিজয়স্তম্ভের ওপর পতাকা উড়িয়ে আনন্দ উল্লাস করছে। এছাড়া শহরের অলিগলিতে খণ্ড খণ্ড আনন্দ মিছিল করছে।
এ দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে তোলা হয়েছে পতাকা। এছাড়া অটোরিকশা সিএনজিসহ বিভিন্ন ছোট ছোট যানবাহন টানানো হয়েছে পতাকা। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড ও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়ক ও আদমজী সড়কও লোকে লোকারণ্য। সবাই আনন্দ মিছিল নিয়ে রাস্তায় নেমেছে। এছাড়া ট্রাক ভাড়া করে বিভিন্ন সড়কে আনন্দ উল্লাস করছে মানুষ।
একই দিন বিকালে সপরিবারে শহরের চাষাড়ায় গিয়ে পুনরায় ‘শহীদ জিয়া হল’ সাইনবোর্ড স্থাপন করেছেন মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খোরশেদ ও তার অনুসারী নেতারা। খোরশেদ জানান, জিয়া হলের নামকরণ মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। সেটি আবার পুনরায় স্থাপন করেছি।
এদিকে সারা শহরে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চললেও কোথাও কোনো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্যকে দেখা যায়নি। খোদ পুলিশ আক্রান্ত হয়েছে থানায় থানায়। মানুষের নিরাপত্তা এখানে চরম হুমকির মুখে বলে জানিয়েছেন শহরের বাসিন্দারা।