মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

|

ভাদ্র ৩১ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

কারাগার থেকে পালানো ফাঁসির ৩ আসামি র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১৫:২০, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কারাগার থেকে পালানো ফাঁসির ৩ আসামি র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

ফাইল ছবি

গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার হতে পলাতক ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত তিন আসামিকে নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১১।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন র‍্যাব ১১ এর এএসপি সনদ বড়ুয়া।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) অভিযান চালিয়ে আড়াইহাজারের পাঁচরুখী এলাকা থেকে ২ জন এবং মুক্তারপুর এলাকা তাদের একজনকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মোসাদ্দেক ওরফে সাদেক আলী (৩২), মোঃ জাকারিয়া (৩২), মোঃ জুলহাস দেওয়ান (৪৫)।    

গ্রেপ্তারকৃত আসামি মোসাদ্দেক এবং জাকারিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ২০০৮ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানাধীন নয়াগাঁও এলাকায় জনৈক বারেক চৌধুরী নামক এক ব্যক্তির বাড়িতে হাঁস ও মুরগী চুরির ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে বারেক চৌধুরীর বাড়িতে একটি সালিশ/বৈঠক হয়। সালিশে শামীম ভুইয়া (৪১), মোসাদ্দেক আলী (৩২) ও জাকারিয়া (৩২) চুরির সাথে জড়িত বলে একই গ্রামের ফজলুল মোল্লার ছেলে মোঃ শামীম স্বাক্ষ্য দেন। চুরির ঘটনায় স্বাক্ষী দেওয়ার কারণে ভিকটিম মোঃ শামীমকে ক্রোধের বশবর্তি হয়ে হত্যার পরিকল্পনা করে। এরই ধারাবাহিকতায় ২৯ মার্চ ২০০৮ তারিখ রাতে আসামি শামীম ভুইয়া ও তার সহযোগী মোসাদ্দেক এবং জাকারিয়া মিলে ভিকটিম মোঃ শামীমকে নয়াগাঁও গ্রামের পারিবারিক গোরস্থানে ডেকে নিয়ে যায়। আসামি শামীম ভুইয়া ও জাকারিয়া ভিকটিমের হাত-পা চেপে ধরে এবং আসামি মোসাদ্দেক ভিকটিমকে ছুরি দিয়ে জবাই করে লাশ ফেলে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ভিকটিমের বাবা উক্ত ঘটনায় বাদী হয়ে ৩০ মার্চ ২০০৮ তারিখ নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ ১২ জুন ২০১৩ তারিখ তাদেরকে মৃত্যুদন্ডের আদেশ প্রদান করেন। 

গ্রেপ্তারকৃত অপর আসামি মোঃ জুলহাস দেওয়ানকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত একজন আসামি। ঘটনার দিন ভিকটিম সাহাদ অনেক অসুস্থ ছিল। ২০১৪ সালের ১৩ই অক্টোবর তাকে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বাবা জুলহাস মুন্সিগঞ্জের পশ্চিম মুক্তারপুরের নিজ বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। এরপর থেকে শিশু পুত্রের বাবা ও সাহাদ নিরুদ্দেশ ছিলেন। নিখোঁজ থাকার তিনদিন পর শিশু পুত্রের বাবা মোঃ জুলহাস দেওয়ান এর সন্ধান পাওয়া যায় । এ সময় ছেলের কথা জিজ্ঞেস করলে ছেলে হারিয়ে গেছে বলে নানা অজুহাতে আশ্রয় নেয় সাহাদের বাবা। এতে সন্দেহ হলে তাকে মুক্তারপুর পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বাবা স্বীকার করে যে সে সাহাদ কে হত্যা করেছে। শিশু পুত্র সাহাদের বাবার স্বীকারোক্তি মতে গত ১৬ অক্টোবর ২০১৪ সালে সাহাদের লাশ নারায়ণগঞ্জ জেলার কয়লাঘাটা এলাকায় একটি মুরগি ফার্মের পাশে ডোবা হতে পাওয়া যায়। পরবর্তীতে স্ত্রী তানিয়া বেগম বাদী হয়ে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে দাম্পত্য কলহের জের ধরে নিজের পাঁচ বছরের শিশু পুত্র সাহাদ (০৫) কে হত্যার দায়ে মুন্সিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ গত ইং ০৯ অক্টোবর ২০১৮ সালে বাবা মোঃ জুলহাস দেওয়ানকে মৃত্যুদন্ডের আদেশ প্রদান করেন।

এর আগে গত ৬ আগস্ট বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে থাকা বন্দিরা বিদ্রোহ করে। বিদ্রোহের সময় বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে বন্দিরা চলমান দাঙ্গা-হাঙ্গামার মধ্যে দক্ষিণ অংশের পেরিমিটার ওয়াল ভেঙ্গে গর্ত করতে থাকলে তা প্রতিহত করা হয়। এ প্রতিহতকালীন সময়ে অন্য দিকে কারা অভ্যন্তরের বৈদ্যুতিক খুঁটি উপরে ফেলে মই বানিয়ে পশ্চিম দিকের দেওয়াল টপকে বেলা ১টা থেকে ২টার মধ্যে ২০৩ জন বন্দি পালিয়ে যায়।