বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪

|

আশ্বিন ৩০ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

নারায়ণগঞ্জে সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত, একপাশে নামাজ অপরপাশে পূজা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১৩:০৯, ১২ অক্টোবর ২০২৪

নারায়ণগঞ্জে সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত, একপাশে নামাজ অপরপাশে পূজা

ফাইল ছবি

একই রাস্তায় পাশাপাশি মসজিদ ও পূজামন্ডপ। একপাশে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের মসজিদ, নামাজ পড়ছেন মুসল্লীরা। অপরপাশে পূজামন্ডপ, চলছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। এক পাশে ধূপকাঠি, অন্য পাশে আতরের সুঘ্রাণ। এক পাশে উলুধ্বনি, অন্য পাশে চলছে নামাজ। যার যার ধর্ম সে সে পালন করছে। এভাবে ধর্মীয় সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যুগ যুগ ধরে চলছে । বলছিলাম নারায়ণগঞ্জ আমলাপাড়া খাতুনে জান্নাত মা ফাতেমাতুজ্জোহরা জামে মসজিদ যা আমলাপাড়া ছোট মসজিদ নামে পরিচিত এবং এক মিটারের কম দূরত্বের আমলাপারাড়া পূজামন্ডপের কথা।

সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপন করা হচ্ছে শারদীয় দুর্গাপূজা। পূজার উৎসবমুখরতার পাশাপাশি  নারায়ণগঞ্জ হয়ে উঠেছে সম্প্রীতির উজ্জ্বল নিদর্শন। এক পাশে মন্ডপের ভেতরে-বাইরে চলছে পূজা-অর্চনা ও উলুধ্বনি। ঠিক আরেক পাশে মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ছেন মুসল্লিরা। তবুও নেই কোন হানাহানি, নেই কোন বাড়াবাড়ি। 

নারায়ণগঞ্জে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নিদর্শন হিসেবে আমলাপাড়া ছোট মসজিদ ও আমলাপাড়া পূজামন্ডপ। ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশে যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে; এর যথার্থই প্রমাণ মসজিদ ও পূজামন্ডপটি। এ যেন ধর্মীয় সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। 

বছরের পর বছর এভাবে চলে আসলেও দুই ধর্মাবলম্বী মানুষের এ নিয়ে নেই কোনও দ্বন্দ্ব । মন্ডপে চলছে দুর্গাপূজা, তবু আজানের সময় নীরবতা বজায় রাখেন পূজারি ও ভক্তরা। প্রতিবেশী হিসেবেও একে অপরের প্রতি আন্তরিক। মসজিদ ও মন্দির পরিচালনাকারীরাও জানালেন বছরের পর বছর ধরে চলে আসা ঐক্যের এই বন্ধনের কথা। 

মসজিদ ও মন্ডপ একসঙ্গে লাগোয়া। মসজিদে আজানের সময় থেকে নামাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত মন্দিরের মাইক, ঢাকঢোল বন্ধ রাখেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের লোকজন। নামাজ শেষ হলে পূজার কার্যক্রম শুরু হয়। সুষ্ঠু ও শৃঙ্খলা বজায় রেখে একই উঠানে বছরের পর বছর ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করে আসছেন উভয় ধর্মের মানুষজন।

এ বিষয়ে ইসলামী আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ মহানগর সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ বলেন, ইসলাম ধর্মীয় সহাবস্থানকে বৈধতা দেয় এবং বাংলাদেশের মানুষ সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতিপ্রিয় মানুষ, যার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এই আমলাপাড়া ছোট মসজিদ এবং এই দুর্গাপূজা মণ্ডপ। ১১ অক্টোবর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে কুশলবিনিময় এর সময় আমলাপাড়া পূজামন্ডপে তিনি এ কথা বলেন। 

প্রবীর কুমার সাহা বলেন, এই পূজা মণ্ডপ থেকে মাত্র ২ ফুট দূরে একটি মসজিদ দীর্ঘদিন ধরে আমরা আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখেছি আমরাও উনাদের ইবাদতে বিঘ্ন ঘটাই না আজান নামাজের সময় আমরা নীরবতা বজায় রাখি একইভাবে উনারাও আমাদের প্রতি সুদৃষ্টি রাখেন।  

ধর্মীয় সম্প্রীতির সাক্ষী হয়ে আছে পাশাপাশি এই মসজিদ-পূজা মন্ডপ। এই ঐতিহ্যকে ধরে রেখে মানুষে-মানুষে ভাতৃত্ববোধ ও সম্প্রীতি অটুট থাকুক এই প্রত্যাশা জানিয়েছেন স্থানীয়রা।