সিভিল সার্জন কার্যালয় ঘেরাও
নারায়ণগঞ্জে মশক নিধনে যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়ার ফলেই জেলায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসছে না বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন ডা. মশিউর রহমান।
রোববার (১ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের উদ্দ্যেশ্যে একথা বলেন তিনি। এর আগে রোববার সকালে ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের অবহেলার প্রতিবাদে সিভিল সার্জনের কার্যালয় ঘেরাও করে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর গণসংহতি আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
এসময় নারায়ণগঞ্জ জেলা গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন বলেন, নারায়ণগঞ্জের চিকিৎসা ব্যবস্থায় আমরা অনেক অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীন আচরণ লক্ষ্য করছি। যার উদাহরন ডেঙ্গু প্রতিরোধে সিটি কর্পোরেশনের ব্যর্থতা। যার খেসারত আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী দিচ্ছি। দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য। ডেঙ্গু চিকিৎসায় আমরা নারায়ণগঞ্জের সরকারী ২ টি হাসপাতালে সক্ষমতার ঘাটতি লক্ষ্য করেছি। কেবলমাত্র ডেঙ্গু নয়, যেকোন সাধারণ চিকিৎসায় নারায়ণগঞ্জবাসীর আশ্রয়স্থল হয়ে উঠার কথা ৩০০ শয্যা খানপুর হাসপাতাল এবং ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে আমরা লক্ষ্য করেছি, বেসরকারি চিকিৎসা খাতকে সুবিধা দিতে সরকারী হাসপাতালগুলোকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই পেছন থেকে টেনে ধরা হচ্ছে। নিতান্ত বিপদে পড়ে এবং যারা একেবারেই অসহায় তারাই সরকারী হাসপাতাল দুটিতে চিকিৎসা গ্রহণ করতে যান। আমরা প্রত্যাশা করি, ৩০০ শয্যা খানপুর হাসপাতাল এবং ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল এই দশা থেকে বেরিয়ে আসবে।
এদিকে আন্দোলনকারীরা সিভিল সার্জন কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করতে থাকলে আন্দোলনকারীদের সাথে কথা বলতে আসেন সিভিল সার্জন ডা. মশিউর রহমান।
এসময় তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ শহরের দুইটি হাসপাতালেই আমরা পৃথক ডেঙ্গু ইউনিট করেছি। সেখানে রেগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মশক নিধনে যে ফগার মেশিন ব্যাবহার করা হচ্ছে সেটা মশা নিধনের জন্য যথেষ্ট না। সিটি করপোরেশন এলাকায় মশক নিধনে ঔষধ প্রয়োগ করা হলেও বাইরের এলাকাগুলোতে একেবারেই কাজ হয় না। আমাদের এই জায়গায় সিটি করপোরেশন ঔষধ প্রয়োগ করে না কারণ এটা ফতুল্লা ইউনিয়নের অন্তর্গত। এখানে আমি থাকি। এখানে ড্রেনগুলোতে একেবারেই ঔষধ দেয়া হয় না। এসপি সাহেব নিজ উদ্যোগে তার বাড়ির আশেপাশে ঔষধ প্রয়োগ করেন। এখন আমরা কোথায় যাবো। আপনারা যদি এখন ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদ ঘেরাও করতে চান আমিও আপনাদের সাথে যাবো।
তিনি বলেন, এই কোর্টে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার লোক এখানে আসে। এখান থেকে কেউ আক্রান্ত হয়ে চলে যাবে নিজ নিজ এলাকায়। আবার কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এখানে আসল এখানে কোন মশা তাকে কামড় দিয়ে ডেঙ্গু পজেটিভ হল। এভাবে পুরো জেলায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ছে।
তিনি বলেন, সকল জেলায় সম পরিমান কিট দেয়া হচ্ছে। এটা হয়ত কার্যকর না। বরগুনায়ও পাঁচশ কিট দিল আবার নারায়ণগঞ্জেও পাঁচশ কিট দেয়া হল। এভাবে তো কাজ হবে না। আমার তো এই পাঁচশ কিট তিন দিনে শেষ হয়ে যাবে।