প্রতীকী ছবি
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে সোমবার দিবাগত রাতে থানা কৃষকদলের অফিসে ভাঙচুর চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এসময় কৃষকদলের অফিসে থাকা চেয়ার-টেবিল, ব্যানার, ছবি, টেলিভিশন ও শার্টার ভাঙচুর করা হয়। অন্যদিকে একই রাতে কয়েকটি বসত-বাড়ি ও দোকানপাটে হামলা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় আতংক বিরাজ করছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ।
এলাকাবাসী ও প্রতক্ষদর্শীরা জানায়, রাতভর কিশোরগ্যাংয়ের ২৫/৩০ জন সদস্যের একটি বাহিনী ধারালো রামদা, চাপাতি ও লাঠিসোঠা হাতে রসুলবাগ ও বাগমারা এলাকার বিভিন্ন অলি-গলিতে মহড়া দিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এসময় কয়েকটি বাড়িতে ঢুকে বাড়ির মালিকদের গালমন্দ করে জানালা, সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করেছে। হামলাকারীরা ভাড়াটিয়াদের ঘরের দরজা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে এবং অনেকের ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দিয়েছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কৃষকদলের আহবায়ক তৈয়ম বলেন, রিয়াজ ও গিয়াস নামে বিএনপি নেতা পরিচয়ধারী দুই ব্যক্তির কিশোরগ্যাংয়ের সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমার অফিসে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এসময় আমার অফিসে থাকা দলীয় ব্যানার-ফ্যাস্টুন ছিঁড়ে ফেলে এবং নেতাদের ছবি ভাঙচুর করে। আমার অফিসের টেলিভিশন, চেয়ার-টেবিল, শার্টার ও গ্লাস ভাঙচুর করে। তারা আমাকে আঘাত করে আমার হাতের ব্যবহৃত মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ বিএনপি নেতা পরিচয়ে কিশোরগ্যাংয়ের একটি বাহিনী গড়ে তুলেছে। বিগত দিনে আমরা দলের জন্য অনেক ত্যাগ শিকার করেছি। এসব নেতাদের তখন আমরা পাইনি।
রসুলবাগ এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মোতালিব জানান, কিশোরগ্যাংয়ের একটি বাহিনী রসুলবাগ এলাকায় প্রভাব বিস্তার করতে প্রতিপক্ষের বাড়িঘর, দোকানপাটে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়েছে। আমরা ঘরের মধ্যে ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। তাদের হাতে ধারালো অস্ত্র ছিলো। যার কারণে ভয়ে কেউ বের হতে সাহস পায়নি।
মানিক মিয়া নামে এক বাড়ির মালিক জানান, এলাকায় প্রভাব বিস্তারের জন্য উঠতি বয়সের কিশোরগ্যাং, মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীদের নিয়ে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে উঠেছে। এ বাহিনী গত কয়েক মাস যাবৎ বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, জমি দখল, বাড়িঘরে হামলা, লুটপাটসহ পুরো এলাকায় সন্ত্রাসের রামরাজত্ব গড়ে তুলেছে। অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাঘমারা এলাকার বাসিন্দা আকবর হোসেন জানান, গভীর রাতে কিশোরগ্যাংয়ের ২০/৩০ জনের একদি দল ধারালো অস্ত্র হাতে ৮/১০টি বসত-বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এছাড়া এলাকায় আরও প্রায় ৩০/৪০টি দোকানে হামলা চালায়। এসময় তারা বাসা-বাড়ির গেইটের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং ভাড়াটিয়াদের ঘরের দরজায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মানুষের মধ্যে ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে। হামলাকারীরা বাসা বাড়ির সিসি ক্যামেরা, জানালার কাঁচ ভাঙচুর করে। রাতভর তারা এলাকায় মহড়া দিতে থাকে। অন্যদিকে থানা কৃষকদলের অফিসেও হামলা চালিয়েছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনুর আলম জানান, আমরা খবর পেয়ে ঐ এলাকায় পুলিশ পাঠিয়েছি। বর্তমানে ঐ এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। হামলাকারীদের চিহিৃত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।