ফাইল ছবি
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে কাঞ্চন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের রাষ্ট্র কাঠামো গঠনে ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাঞ্চন পৌর বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত বিএনপির সমাবেশকে উদ্দেশ্য করে তৈরি পোষ্টার ও তোরনে ত্যাগী নেতাদের অবমূল্যায়ন, আওয়ামীলীগের দোসরকে প্রাধান্য দেয়ায় নেতাকর্মীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এতে দলের মধ্যে গ্রুপিং সৃষ্টি হয়েছে। যারা এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে তাদেরকে ধিক্কার দিয়েছেন অনেকে।
জানা যায়, গত ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে একসময়ের কাঞ্চন পৌর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ছানাউল্যাহ মান্নান সানী নিজের অবস্থান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ঠিক রাখা ও নিজেকে এলাকার অঘোষিত গডফাদার হিসেবে হাসিল করতে রূপগঞ্জের সাবেক সাংসদ গোলাম দস্তগীর গাজীর হাত ধরে আওয়ামীলীগে বিভিন্ন কর্মকান্ডে অংশ গ্রহন করেন। এলাকায় কাঞ্চন পৌর সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি, আব্দুর রহমান লিটু, ছাত্রলীগের সভাপতি আইয়ুবুর রহমান খোকাকে দিয়ে একটি লাঠিয়াল বাহিনী তৈরী করেন। আর সেই বাহিনীর গড ফাদার হিসেবে ছিলেন ছানাউল্যাহ মান্নান সানী। বিগত সরকারের আমলে কাঞ্চন বাজারসহ আশে পাশে গড়ে উঠা অনেক প্রতিষ্ঠান তার ভয়ে আতংকে থাকতো। তার মালিকানাধীন ডিশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সানী ক্যাবল নেটওয়ার্কের অফিসে ছিল তার রাজনীতি ও অপকর্মের কার্যালয়। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও কাঞ্চন পৌর নির্বাচনে এমপি গাজীর ছেলে পাপ্পাকে নিয়ে কাঞ্চন পৌরসভার নির্বাচন মনিটরিং সেল হিসেবে তার অফিস ব্যবহৃত হয়েছে। সারা দিন যত অপরাধমূলক কর্মকান্ড ঘটতো সেগুলো নিয়ে রাতে তার অফিসে গোপন বৈঠক বসতো।
তার এই অপকর্মরের কারনে গাজী পুত্র পাপ্পা ও গাজীর পিএস এমদাদ, কাঞ্চন পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক গোলা রসুল কলির আস্থাবাজন হয়ে উঠে। তাদের আশ্বাসে নিজেকে কাঞ্চন পৌর যুবলীগের সভাপতি হবার জন্য দৌড়যাপ শুরু করেন। যুবলীগ নেতা হিসেবে আওয়ামীলীগের বিভিন্ন সভা সমাবেশে অংশ গ্রহনও করতে দেখা গেছে সানীকে।
এদিকে ৫ আগষ্ট ছাত্র জনতার আন্দোলনের চাপে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালানোর পর নিজের খোলশ পাল্টে নিজেকে বাচাতে কাঞ্চন বাজারে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদে আনন্দ মিছিলে অংশ গ্রহন করে সে। এমনকি তার নির্দেশে আওয়ামীলীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের বাড়ী ঘরে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালায় তার অনুসারীরা। যোগ দেন কেন্দ্রিয় বিএনপি নেতা কাজী মনিরুজ্জামানের বলয়ে। কাজী মনির যেখানে সভা সমাবেশ করেন সেখানেই তার উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। বর্তমানে সে কাঞ্চন পৌর যুবদলের সভাপতি প্রার্থী হিসেবে প্রচারনা চালাচ্ছে।
স্থানীয় নেতার্মীরা জানান, বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে যারা দলকে ভালবাসতেন তাদের মধ্যে কাঞ্চন পৌর যুবদলে যুগ্ম আহবায়ক এডভোকেট ফাইজুর রহমান, পৌর যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারন সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন, পৌর যুবদল নেতা সাদ্দাম হোসেন, পৌর যুবদলের আহবায়ক সদস্য শরীফ ও যুবদলনেতা আওলাদ মাহবুব রয়েছে। বিগত সরকারের আমলে তাদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানী করা হলেও তারা দলকে ভালবেসে সেটা সহ্য করেছেন। আগামীকাল শনিবার কাঞ্চন পৌর বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো গঠনে ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাঞ্চন ভারত চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। সেজন্য কাঞ্চন পৌরসভার বিভিন্ন সড়কে রং বে রংয়ে ব্যানার ফেস্টুন, তোরনে ছেয়ে গেছে। এসকল পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন, তোরনে বিএনপির সেই ত্যাগী নির্যাতিত নেতাদের ছবি সঠিক জায়গায় ব্যবহার না করে। সেখানে আওয়ামীলীগের দোসর ছানাউল্যাহর ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। এতে করে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এতে কাজী মনির সমর্থকদের মধ্যে দুইটি গ্রুপ তৈরী হচ্ছে। এই দুই গ্রুপ যে কোন সময় বড় ধরনের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে পারে বলে স্থানীয়রা ধারনা করছেন।
ত্যাগী নেতাদের সমর্থকদের দাবী আওয়ামীলীগের দোসর সানাউল্লাহ মান্নান সানীকে যেন দলকে সরিয়ে দেয়া হয়।