বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ড. শফিকুর রহমান
নারায়ণগঞ্জে প্রায় দীর্ঘ দুই দশক পর জনসভা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ শহরের ওসমানী স্টেডিয়ামে জনসভা করবে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর জামায়াতে ইসলামী। জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ড. শফিকুর রহমান।
ইতিমধ্যে জনসভা সফল করতে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন থানা, ইউনিয়ন, উপজেলা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে আলোচনা সভা ও কর্মী সভা করেছে জামায়াত। জনসভায় লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটতে পারে বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা।
দীর্ঘ সতেরো বছর হামলা মামলায় জর্জরিত হয়ে রাজপথে কোনঠাসা অবস্থায় ছিল জামায়াত। নারায়ণগঞ্জে ২০১৩-১৪ সালের আন্দোলনের পর থেকে হামলা মামলার কারনে আওয়ামী লীগের শাসনামলের বাকি সময়টুকু আন্ডারগ্রাউন্ডেই থাকতে হয়েছে জামায়াতকে।
এসময় নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন স্থানীয় ও রাজনৈতিক ইস্যুতে সরব হওয়ার চেষ্টা করলেও প্রশাসনের তৎপরতার কারণে রাজপথে ততটা সক্রিয় দেখা যায়নি জামায়াতকে। নারায়ণগঞ্জ জেলা জামায়াতের শীর্ষ নেতারা আত্মগোপনে থেকেই দল পরিচালনা করে গেছেন এসময়। জামায়াতকে সাংগঠনিক ভাবে টিকিয়ে রাখাই সেসময় দলটির নেতাদের জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছিল।
২০১৮ সালের নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের সাথে নির্বাচনে জোটবদ্ধ হয়ে নামে জামায়াত। একতরফা সেই নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জে জামায়াতে ইসলামীকে প্রচার প্রচারনায় নামতেই দেয়া হয়নি।
২০২২ সালে সরকার পতনের আন্দোলন চাঙ্গা হয়ে উঠলে চাঙ্গা হয়ে ওঠে জামায়াত। নারায়ণগঞ্জে তৎকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত জামায়াত নেতারা তখন থেকেই দলকে সুসংগঠিত করতে কাজ শুরু করেন।
২০২৩ সালের ১০ জুন ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার ইনিস্টিউটে জনসভা ডাকে জামায়াত। বিগত দশকে রাজধানীতে জামায়াতের সেটিই ছিল প্রথম জনসভা। প্রশাসন ও তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারকে তাক লাগিয়ে দিয়ে সেই সমাবেশের লক্ষাধিক লোকের সমাজলগম ঘটে। ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা হিসেবে সেই সমাবেশ সফল করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে জামায়াত। মিছিল নিয়ে না এসে কৌশলগত কারণে পৃথকভাবে ঢাকায় প্রবেশ করে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর জামায়াতে ইসলামীর হাজারও নেতাকর্মী।
৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দৃশ্যপটে চলে আসেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা। জামায়াতের কেন্দ্রীয় শুরা কমিটির সদস্য মাওলানা মাইনুদ্দিন ও মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমীর আব্দুর জব্বারসহ নারায়ণগঞ্জ জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের প্রশাসনের প্রতিটি মিটিংয়ে অংশ নিতে দেখা গেছে। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জে নিয়মিত সভা সমাবেশ ও দলীয় কর্মসূচি চালিয়ে আসছে জামায়াত।
আগামী নির্বাচনে বিএনপির সাথে জোটবদ্ধ নয় বরং আলাদা নির্বাচন করবে জামায়াত এমনটাই এখন সর্বত্র আলোচিত। নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি আসনেই প্রার্থী দিতে চায় দলটি। এমন পরিস্থিতিতে নারায়ণগঞ্জে জামায়াত এই বিশাল শোডাউনের মধ্য দিয়ে নিজেদের শক্তির জানান দিতে চাইছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।