
ফাইল ছবি
নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের সম্পত্তি নারায়ণগঞ্জের মানুষের রক্তে গড়া সম্পত্তি। তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করতে হবে– এমন দাবি তুলেছেন সন্ত্রাসবিরোধী ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি। তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার ১২ বছর উপলক্ষে শনিবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জে এক কর্মসূচিতে এ দাবি তোলেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট চাষাঢ়ায় অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এদিন উপলক্ষে আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচি আয়োজন করে। সেখানে ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি অভিযোগ করেন, ওসমান পরিবারের ফেলে যাওয়া সম্পত্তি রক্ষার দায়িত্ব নিয়েছে ফকির গ্রুপ। ‘ক্রয়সূত্রে এই সম্পত্তির মালিক ফকির অ্যাপারেলস’ এমন ভুয়া সাইনবোর্ড লাগিয়ে তারা ওসমানদের সম্পত্তি রক্ষার কৌশল নিয়েছে। ফকির গ্রুপের পাশাপাশি নিট কনসার্নকেও ওসমান পরিবারের লুটপাটের নৈতিক সহায়ক হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।
রফিউর রাব্বি বলেন, ‘ওসমান পরিবার হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করেছে। দলের সর্বোচ্চ মহল থেকে মন্ত্রী, এমপি, আমলা সব পর্যায়ে তারা এই লুটের টাকা বণ্টন করেছে। তাদের দলীয় নেতারাই বলেছেন, মন্ত্রী ওবায়েদুল কাদেরকে ১০ কোটি টাকা দিয়ে ‘নাসিম ওসমান সেতু’, ‘শামসুজ্জোহা সড়ক’ ও ‘নাগিনা জোহা সড়ক’ নামকরণ করা হয়েছে। সে সময় আমি প্রশ্ন করেছিলাম, নারায়ণগঞ্জে এই মানুষগুলোর অবদান কী? কেন একই সঙ্গে তিনটি রাস্তা ও সেতুর নাম একই পরিবারের নামে করা হলো। তারা তখন আমার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়েছিল। আমরা আজকে সরকারের কাছে এই খুনি পরিবারের নামে থাকা সেতু ও সড়কের নাম পরিবর্তন দাবি করছি।’ তিনি বলেন, ত্বকী হত্যার সব ঘাতকের নাম অভিযোগপত্রে যুক্ত করে দ্রুত অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিতে হবে।
নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি অ্যাডভোকেট জিয়াউল ইসলাম কাজলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি রথীন চক্রবর্তী, দৈনিক খবরের পাতার সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহাবুবুর রহমান মাসুম, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা ভবানী শংকর রায় ও নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক দীপু।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরীর শায়েস্তা খাঁ সড়কের বাসা থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয় তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খালে পাওয়া যায় মেধাবী এই কিশোরের লাশ। একই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। এতে সে জানায়, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। ২০১৪ সালের ৫ মার্চ মামলার তদন্তকারী সংস্থা র্যাবজানায়, ওসমান পরিবারের নির্দেশে তাদেরই টর্চার সেলে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছে।