
বিক্ষোভ সমাবেশ
বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন এর কেন্দ্রীয় সভাপতি ছাত্রনেতা মশিউর রহমান রিচার্ডকে গভীর রাতে পুলিশী হয়রানির প্রতিবাদ ও ছাত্রনেতাদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার ১৬ মার্চ বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার উদ্যোগে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন এর কেন্দ্রীয় সভাপতি ছাত্রনেতা মশিউর রহমান রিচার্ডকে গভীর রাতে পুলিশী হয়রানির প্রতিবাদ ও ছাত্রনেতাদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও সংক্ষিপ্ত মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সমাবেশে জেলা কমিটির অর্থ সম্পাদক ছাত্রনেতা শাহিন মৃধা বলেন, আওয়ামী কায়দায় বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন এর কেন্দ্রীয় সভাপতি ছাত্রনেতা মশিউর রহমান রিচার্ড কে মধ্যরাতে পুলিশী হেনস্তার প্রতিবাদ এবং সকল ছাত্রনেতার নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাই। কথা একটাই হামলা করে এই আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না,মামলা করে এই লড়াই বন্ধ করা যাবে না। বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন সকল অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে সবসময় বুক চিতিয়ে লড়েছে এবং আগামীতেও লড়বে।
সমাবেশে জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক ছাত্রনেতা মৌমিতা নূর বলেন, ৫ই আগস্ট এর পূর্বের বাংলাদেশে আমরা পুলিশের যে গুন্ডা চরিত্র দেখেছি ৫ই আগস্টের পরবর্তী বাংলাদেশেও আমরা পুলিশের সেই গুন্ডা চরিত্রই দেখতে পাচ্ছি আমরা বলছি '২৪ এর গণঅভ্যূত্থানে জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা সেই আকাঙ্ক্ষার মধ্যে অন্যতম একটি আকাঙ্ক্ষা এটিও ছিল যে কোন নাগরিক পুলিশের হেনস্থার শিকার হবেনা। ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন যখন দেশের জনগনকে আবারও সংগঠিত করছে ঠিক সে সময়েই ধর্ষনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ এর স্মারকলিপি প্রদান কর্মসুচিতে পুলিশ বাধা দেয় এবং এই হামলাকে এমনভাবে প্রচার করা হয়েছে যে মনে হচ্ছে ছাত্ররা পুলিশের উপর চড়াও হয়েছে এবং শুধুমাত্র এই বিষয়টি দিয়ে পুরো ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনটাকে সারা দেশে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা আমরা প্রত্যক্ষ করলাম। আমরা বলছি এই যে একটা ঘটনা দিয়ে আরেকটা ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়া,পরিবর্তিত বাংলাদেশে আমরা এই আচরণ দেখতে চাই না। বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ড,সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফসহ বিভিন্ন ছাত্রনেতৃবৃন্দের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। এবং গভীর রাতে নেতাকর্মীদের বাসায় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের নাম করে তাদের তুলে নেওয়া এ ধরনের আচরণ কোনভাবেই কাম্য নয়। ৫ ই আগস্ট এর পূর্বের বাংলাদেশে মশিউর রহমান খান রিচার্ডসহ ছাত্র নেতাদের নামে মামলা করে বিভিন্ন যৌক্তিক আন্দোলনকে থামিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা আমরা দেখেছি, ৫ ই আগস্টের পরে আমরা এই প্রচেষ্টা আর দেখতে চাই না।
সভাপতির বক্তব্যে ছাত্রনেতা ফারহানা মানিক মুনা বলেন, ধর্ষণবিরোধী এই আন্দোলন ছিল নারীর নিরাপত্তা, ন্যায্যতার জন্য। কিন্তু দেখলাম ন্যায্যতার লড়াইয়ে নানান ট্যাগ দিয়ে বিভাজন তৈরি করার চেষ্টা করা হলো। পুলিশ পরবর্তীতে জনতাকে রক্ষা করার বদলে মামলা করার মধ্য দিয়ে বিভাজনের ষড়যন্ত্রকে উস্কে দিল। শুধু মামলাই নয় বিগত ১৫ বছরের স্বৈরাচারি কায়দায় গভীর রাতে ছাত্র ফেডারেশন সভাপতি মশিউর রহমানে বাড়িতে তারা হানা দিল! আমরা মনে করি, এসব মিথ্যা মামলা রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব উদ্দেশ্যপ্রবণ হামলা-মামলার রাজনীতি থেকে বের হয়ে ন্যয্যতার-নিরাপত্তার-ন্যায় বিচারের- মর্যাদার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার সম্মিলিত অংশগ্রহণে অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছিল। এখন সময় অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়নের। যারা নানান ভাবে ট্যাগিঙের-বিভাজনের রাজনীতি করার চেষ্টা করেছে তাদের সকলকে চিহ্নিত করে রাখতে হবে। তারা অভ্যুত্থানের তথা বাংলাদেশের বিরুদ্ধ শক্তি। বাংলাদেশ কে এগিয়ে নিতে বিভাজনের সকল ষড়যন্ত্রকে রুখে দিয়ে নিজেদের ঐক্য সংহত রাখাই আমাদের কর্তব্য। সকল হামলা-মামলা উপেক্ষা করে ছায়্র ফেডারেশন সামনের সাড়িতে দাড়িয়ে তার রাজনৈতিক কর্তব্য পালন করবে। অনতিবিলম্বে প্রশাসনকে বিগত স্বৈরাচারি সংস্কৃতিকে ছুড়ে ফেলে জনতার পক্ষে অবস্থান নিতে হবে এবং ছাত্রনেতাদের নামে সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ছাত্রনেতা ফারহানা মানিক মুনা, সাধারণ সম্পাদক সৃজয় সাহা, সহ সাধারন সম্পাদক ইউশা ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মৌমিতা নুর, অর্থ সম্পাদক শাহিন মৃধা, নারায়ণগঞ্জ কলেজ শাখার সদস্য সচিব আবিদ রহমান, সদস্য শেখ সাদী,ভোলাইল আঞ্চলিক শাখার আহ্বায়ক মাহাদি হাসান সহ বিভিন্ন শাখার নেতৃবৃন্দ।