শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

|

বৈশাখ ১০ ১৪৩২

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

ব্যাক্তি ও ব্যাবসায়ের স্বার্থে একটু আঁতাত করেছে, সে আ.লীগ হতে পারেনা : শাহীন 

আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনে অভিযুক্ত, বিতর্কিত নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষকদল!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১৫:৫৬, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনে অভিযুক্ত, বিতর্কিত নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষকদল!

ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষকদলের কমিটিতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পুনর্বাসনের অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে বিতর্কিত ব্যাক্তিদের পদায়নের অভিযোগে কৃষকদলের বেশ কয়েকটি কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। 

এছাড়াও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে বহিষ্কারও করেছে কৃষকদল।

এসব কারণে কৃষক দলের নেতাকর্মীরা আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপিকে সকল বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে জেলা কৃষক দলের কমিটি ও সংশ্লিষ্ট থানা ও ইউনিট কমিটিগুলোও বাতিল অথবা অস্থগিতের দাবি করছেন।

অভিযোগ রয়েছে, জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ড. মোঃ শাহীন মিয়ার বিরুদ্ধেও। নেতাকর্মীরা জানান, ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ও কিংস পার্টির হয়ে রূপগঞ্জে কিংস পার্টির এক নেতার পক্ষে নির্বাচনী কার্যক্রম করেছেন শাহীন মিয়া। 

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ, আড়াইহাজার, রূপগঞ্জ, ফতুল্লাসহ বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নেতাকর্মীদের দলে ভিড়িয়েছেন ড. শাহীন মিয়া। আড়াইহাজারের সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম বাবু, রূপগঞ্জের সাবেক এমপি ও মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী ও সোনারগাঁয়ে জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত বেশ কয়েকজন নেতা জেলা কৃষকদলের কমিটিতে দায়িত্ব পেয়েছেন শাহীনের আশির্বাদে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক পদে আছেন গাজীর ঘনিষ্ঠ লোক হিসেবে পরিচিত হাজী দেওয়ান মাহমুদ। এ নিয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এমপি গাজীর সাথে হাজী দেওয়ান মাহমুদের একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

তারাব পৌরসভা কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাদল ভূঁইয়া, রূপগঞ্জ থানা কৃষকদলের সহ সাধারণ সম্পাদক মোঃ মোজাম্মেল আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত ছিলেন। পাঁচ আগষ্টের পর জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর কৃষকদলে পুনর্বাসিত হন এই দুই নেতা।

এছাড়াও জেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আলী হোসেন, রূপগঞ্জ থানা কৃষকদলের সহ সভাপতি আসাদুল্লাহ, রূপগঞ্জ থানা কৃষকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ উজ্জ্বল মিয়া দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের স্থানীয় এমপি গাজীর সাথে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার অভিযোগ রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গাজীর সাথে তাদের একাধিক ছবি ও তাদের নাম প্রচারিত আওয়ামী লীগের পোস্টারের ছবি ভাইরাল হয়েছে।

এছাড়াও পাঁচ লক্ষ টাকার বিনিময়ে জেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক পদ কেনার অভিযোগ রয়েছে আওয়ামী লীগ নেতা আলী আহমেদের বিরুদ্ধে। বর্তমানে তিনি জেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক পদে আছেন। এছাড়াও সোনারগাঁ থানা কৃষকদলের সভাপতি হওয়ার জন্য নিয়মিত তদবির চালাচ্ছেন এই নেতা।

এবিষয়ে জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ড. মোঃ শাহীন মিয়া জানান, কৃষকদলের একটা লোকও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত না। সামাজিক, ব্যাক্তিত্ব সম্পন্ন ও শিল্পপতি লোকগুলোকে নিয়েই আমি এই কৃষকদলের কমিটি এনেছি। একটি লোক অপজিশনে থেকে যখন ব্যাবসা করে। সে আবার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে যেখানে সেখানে আবার গাজীর বাড়ি। সেখানে সামাজিক অনুষ্ঠানে তো সে যেতেই পারে। সেই ছবি তুলে কেউ যদি বলে সে আওয়ামী লীগের লোক তা কী করে হয়। দেওয়ান শিল্পপতি মানুষ, সে সিটি গ্রুপের সাথে জড়িত। সিটি গ্রুপের মালিক যদি গাজীর সাথে তাকে নিয়ে যায় তাহলে কী সে আওয়ামী লীগ হয়ে যায়। এই ছবিগুলো নিয়ে কিছু লোক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে দলকে এবং দলের সুনামকে ক্ষুন্ন করছে। তারা দলের সুনাম চায় না। তারা দলকে বিতর্কিত করার পায়তারা করছে।

তিনি আরো বলেন, আমি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে বলব দলের বিরুদ্ধে একশন নিবেন ঠিক আছে। যারা দলের অপকর্মের সাথে জড়িত, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কাজের সাথে জড়িত তাদের বাছাই করে ব্যাবস্থা নিবেন এটাই আমার চাওয়া। একটু যাচাই বাছাই করে একশনে যাওয়া উচিত। যে মানুষগুলো সারা জীবন দলের হয়ে কাজ করেছে। ব্যাক্তিস্বার্থে, সমাজিক ও ব্যাবসায়ের স্বার্থে কিংবা বেচে থাকার জন্য দুঃশাসনের আমলে তারা একটু আঁতাত করে চলেছে। এজন্য সে আওয়ামী লীগ হয়ে যেতে পারে না। সে আওয়ামী লীগ হতে পারে না। তাকে আওয়ামী লীগ বললে আমাদের জন্য অন্যায় হবে।