ফাইল ছবি
নারায়ণগঞ্জের সকল শিল্প কারখানায় পানি পরিশোধন প্ল্যান্ট বা ইটিপি স্থাপন করা যায়নি এতদিনেও। এটি বাধ্যতামূলক করার ২৭ বছর পরও নারায়ণগঞ্জের সব শিল্পকারখানায় এর বাস্তবায়ন করা যায়নি।
এখনও নদী ও জলাশয়ে তরল বর্জ্য ফেলছে শতাধিক ডাইং কারখানা। যেসব কারখানায় ইটিপি আছে, তারাও নিয়মিত পানি পরিশোধন করছে না। এতে শুধু নদী, পরিশের ক্ষতি হচ্ছে না; দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়ছে মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর স্বাস্থ্যের ওপরও। মাঝেমধ্যে অভিযান ও কিছু জরিমানা করেই নিজেদের দায় সারছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
ডায়িং কারখানার রাসায়নিক মিশ্রিত পানি সরাসরি ফেলা হচ্ছে নালায়। দূষিত এই রঙিন পানি খাল-বিল হয়ে চলে যাচ্ছে বুড়িগঙ্গা-শীতলক্ষ্যায়। একসময় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা যেসব প্রাকৃতিক জলাশয় নারায়ণগঞ্জের আশীর্বাদ ছিল, দূষণের কারণে সেগুলোই এখন যেন অভিশাপে পরিণত হয়েছে।
নগরীর নদী-নালা, খাল-বিল কোথাও নেই স্বচ্ছ পানির অস্তিত্ব। যেদিকে চোখ যায়, শুধু কালো দুর্গন্ধযুক্ত পানি। বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণাগারে নারায়ণগঞ্জের খালের পানি পরীক্ষা করে পাওয়া গেছে দূষণের ভয়াবহ চিত্র। আশপাশের মানুষ যার প্রভাব টের পাচ্ছে।
অথচ আইন অনুসারে, এসব তরল বর্জ্য ইটিপি অর্থাৎ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে পরিশোধন করে খালে ফেলার কথা শিল্প কারখানাগুলোর। কিন্তু সরকারি হিসেবে, নারায়ণগঞ্জের তরল বর্জ্য নির্গমনকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর ২৫ শতাংশে ইটিপি এখনও স্থাপিত হয়নি।
পরিবেশ অধিদপ্তরও এই তথ্য স্বীকার করেছে। তারা জানায়, যেসব প্রতিষ্ঠানে ইটিপি আছে, তারাও অনেকে নিয়মিত পানি পরিশোধন করে না। কিছু প্রতিষ্ঠানে নিয়মমতো পানি পরিশোধন করা হলেও সব কারখানায় ইটিপি না থাকায় সুফল পাচ্ছে না নারায়ণগঞ্জের মানুষ।
নারায়ণগঞ্জের প্রতিটি ডাইং কারখানায় ইটিপি নিশ্চিত করতে সহজ শর্তে ঋণ ও আর্থিক সুবিধার দাবি ব্যবসায়ী নেতাদের। নদীর দূষণ ঠেকাতে খালের মুখে সরকারি ব্যবস্থাপনায় কেন্দ্রীয় ইটিপি স্থাপনের পরামর্শ তাদের।
অবশ্য ইটিপি না থাকার জন্য টাকার সংকট নয়, ব্যবসায়ী ও সরকারের সদিচ্ছার অভাবকেই দায়ী করছেন পরিবেশবিদরা। পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে, এ বছরের পর, ইটিপি ছাড়া আর কোনো কারখানা চলতে দেয়া হবে না নারায়ণগঞ্জে।