সড়ক
নির্মাণের চার বছরের মধ্যে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের একটি সড়কের ইট-সুরকি উঠে গেছে। ফলে এখানে সেখানে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। এতে করে এলাকাবাসীকে চলাচল করতে গিয়ে পড়তে হচ্ছে ভোগান্তির মুখে। প্রায়ই ওই সড়ক দিয়ে চলাচলের সময় খানাখন্দে আটকে যায় ছোট যানবাহন। সামান্য বৃষ্টিতে তলিয়ে যাওয়া গর্তের গভীরতা না বুঝে দুর্ঘটনার শিকারও হতে হচ্ছে।
২৩০০ মিটার দীর্ঘ সড়কটি পড়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) ২ নম্বর ওয়ার্ডে। মিজমিজি আনন্দলোক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কান্দাপাড়া ক্যানেলপাড় হয়ে নারায়ণগঞ্জ লিঙ্ক রোডের পাসপোর্ট অফিস পর্যন্ত অংশে দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তির শিকার হয়ে আসছেন লোকজন। তাদের অভিযোগ, নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছিল। ফলে প্রায় ২০ কোটি টাকা খরচ করে নির্মিত সড়কটি চার বছরের মধ্যেই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, ওই সড়কে বেশির ভাগ যানবাহনকে চলাচল করতে হচ্ছে হেলেদুলে। গর্ত এড়াতে এঁকেবেঁকে চলাচলের সময় দুর্ঘটনা ঘটছে বলে জানান রিকশাচালক মো. আমির হোসেন।
তাঁর ভাষ্য, ভাঙা সড়কে তিনি কয়েকবার যাত্রীসহ উল্টে গর্তে পড়েছেন। বৃষ্টিতে তলিয়ে যাওয়া গর্ত কোথায়, সবসময় বোঝা যায় না। ফলে অন্য এলাকার চালকরা ইজিবাইক, অটোরিকশা নিয়ে প্রায়ই উল্টে পড়েন।
এ তথ্যের সত্যতা মেলে সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক মো. বাচ্চু মিয়ার কথায়। তিনি বলেন, এখন বর্ষাকাল। তাই রাস্তাটি পানিতে ডুবে আছে। কোন কোন জায়গায় গর্ত, তা বুঝে উঠতে পারেননি। এদিন সকাল ১০টার দিকে তাঁর অটোরিকশা গর্তে আটকে পড়েছিল। এলাকাবাসীর সহায়তায় টেনে তুলতে সক্ষম হন।
মিজমিজি কান্দাপাড়ার বাসিন্দা মো. নাজিম উদ্দিনের ভাষ্য, এই সড়ক দিয়ে ভারী পণ্যবাহী যানবাহন দ্রুতগতিতে চলাচল করে। ফলে ইট-সুরকি, কার্পেটিং সব উঠে গেছে। এখন সড়কজুড়ে বড় বড় গর্ত। এখান দিয়ে চলাচল করাই দায় হয়ে পড়েছে।
সড়কটি নির্মাণের সময় ঠিকাদার মানসম্মত উপকরণ দেননি বলে অভিযোগ করেন মিজমিজির বাসিন্দা মো. কামাল হোসেন। পেশায় এই ব্যবসায়ীর ভাষ্য, নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের ফলে সড়কটি দ্রুত সময়েই বেহাল হয়ে পড়েছে। একই অভিযোগ করেন ওই এলাকার মো. ইসমাইল হোসেন, মো. রফিকুল ইসলামসহ কয়েকজন।
চার বছর আগে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ২০ কোটি টাকায় ২৩০০ মিটার দীর্ঘ সড়কটি নির্মাণ করে। এটির ঠিকাদারি পান ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. হাসমত আলী হাসু। তিনি নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাঁর দাবি, যেহেতু রাস্তাটি নতুনভাবে করা হয়েছে, সেহেতু আরসিসি ঢালাই দিয়ে করা উচিত ছিল। এতে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হতো না। আরসিসি ঢালাই না হওয়ায় ভারী যানবাহনের চাপে মাঝেমধ্যে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে।
এ সড়কের কারণে জনদুর্ভোগের তথ্য স্বীকার করেন ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ইকবাল হোসেন। কিন্তু চলতি অর্থবছরে রাস্তাটি সংস্কার কিংবা মেরামত করা সম্ভব নয় বলে জানান তিনি। কারণ জানতে চাইলে ইকবাল হোসেন বলেন, বাজেট নেই। তাই কাজ হবে না।