মঙ্গলবার, ০১ এপ্রিল ২০২৫

|

চৈত্র ১৬ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

রোজার ফিদইয়া আদায়ের নিয়ম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১১:৫৩, ২৪ মার্চ ২০২৫

রোজার ফিদইয়া আদায়ের নিয়ম

প্রতীকী ছবি

অপার মহিমার মাস রমজান। আত্মশুদ্ধি-আত্মগঠনের এ মাসে মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তোষ অর্জনের জন্য ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।

রমজান মাসকে সঠিকভাবে পালনে করণীয় ও বর্জনীয়সহ নানা বিষয়ে জানার থাকে মুসল্লিদের।  

পবিত্র কোরআন ও হাদিস শরিফের আলোকে আজ আমরা রোজার ফিদইয়া আদায়ের নিয়ম সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবো। বার্ধক্য বা জটিল কোনো রোগের কারণে যার রোজা রাখার সামর্থ্য একেবারেই নেই এবং পরে কাজা করার সামর্থ্য ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনাও নেই এমন ব্যক্তি রোজার পরিবর্তে ফিদইয়া প্রদান করবেন। ফিদইয়া হলো, একজন মিসকিনকে দু’বেলা তৃপ্তিসহ খানা খাওয়ানো। তবে এর মূল্য দেওয়াও অনেক আলেমের মতে জায়েজ। অর্থাৎ পৌনে দুই কেজি গম বা তার মূল্য।

আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘আর যাদের জন্য রোজা অত্যন্ত কষ্টকর হয় তারা এর পরিবর্তে ফিদইয়া তথা মিসকিনকে খাদ্য দান করবে। ’ (সুরা বাকারা ২: ১৮৪) 

এক রোজার পরিবর্তে এক ফিদইয়া ওয়াজিব হয়। (আদদুররুল মুখতার ২/৪২৬)

যাদের জন্য রোজার পরিবর্তে ফিদইয়া দেওয়ার হুকুম রয়েছে তারা রমজান শুরু হওয়ার পর পুরো মাসের ফিদইয়া একত্রে দিয়ে দিতে পারবে। (আদদুররুল মুখতার: ২/৪২৭)

যাদের ওপর ফিদইয়া জরুরি নয়
দুই শ্রেণির মানুষ (অর্থাৎ দুর্বল বৃদ্ধ ও এমন রোগী, বাহ্যত যার রোজা কাজা করার শক্তি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই) ছাড়া আরও যাদের জন্য রোজা ভঙ্গ করা জায়েজ আছে (যেমন মুসাফির, গর্ভবতী ও শিশুকে স্তন্যদানকারিনী ইত্যাদি) তারা ওজরের কারণে রোজা না রাখলে রোজার ফিদইয়া দেবে না; বরং পরে কাজা করবে।  

আর যদি ওজর অবস্থায় মারা যায় তাহলে তাদের ওপর কাজাও নেই, ফিদইয়ার অসিয়ত করাও জরুরি নয়। অবশ্য ওজর শেষ হওয়ার পর কাজার সময় পেয়েও যদি কাজা না করে থাকে অতঃপর মৃত্যুমুখে পতিত হয়, তাহলে ওজরের পর যে ক’দিন রোজা রাখার সময় পেয়েছে সে ক’দিনের জন্য ফিদইয়ার অসিয়ত করে যেতে হবে। (রদ্দুল মুহতার: ২/৪২৩-৪২৪)

রোজার কাজা করা সম্ভব না হলে অসিয়ত করে যাওয়া কি জরুরি
 ওজরবশত ছুটে যাওয়া রোজার কাজা করা সম্ভব না হলে মৃত্যুর আগে ফিদইয়া দেওয়ার অসিয়ত করে যাওয়া জরুরি। অসিয়ত না করে গেলে ওয়ারিশরা যদি মৃতের পক্ষ থেকে এমনিতেই ফিদইয়া আদায় করে দেয় তবে আশা করা যায়, আল্লাহতায়ালা তা কবুল করবেন। (রদ্দুল মুহতার: ২/৪২৪-৪২৫)

যাদের ফিদইয়া দেওয়া যাবে
এক রোজার ফিদইয়া একজন মিসকিনকে দেওয়াই উত্তম। তবে একাধিক ব্যক্তিকে দিলেও ফিদইয়া আদায় হবে। তদ্রুপ একাধিক ফিদইয়া এক মিসকিনকেও দেওয়া জায়েজ। (রদ্দুল মুহতার : ২/৪২৭)
 

যাদের ফিদইয়া দেওয়া হলে আদায় হবে না
ছোট বাচ্চা বা নাবালককে খাওয়ালে ফিদইয়া আদায় হবে না। (ফাতাওয়া খানিয়া : ২/২০)

সুস্থতা ফিরে ফেলে ফিদইয়ার বিধান
অক্ষম বৃদ্ধ ও মৃত্যুমুখে পতিত রোগী যদি সুস্থতা ফিরে পায় এবং আবার রোজা রাখতে পারে তাহলে তাদের ছুটে যাওয়া রোজাগুলোর কাজা করতে হবে। এক্ষেত্রে আদায়কৃত ফিদইয়ার জন্য আলাদা সওয়াব পাবে। (আদদুররুল মুখতার: ২/৪২৭)