মঙ্গলবার, ০১ এপ্রিল ২০২৫

|

চৈত্র ১৬ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

নারায়ণগঞ্জে ফুটপাতে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা, ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০০:৪৮, ২৯ মার্চ ২০২৫

নারায়ণগঞ্জে ফুটপাতে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা, ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়

ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জের ফুটপাতে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। ঈদের নতুন পোশাকসহ প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। ঈদকে ঘিরে সকাল থেকে রাত অবধি ফুটপাতে বেচাকেনা হচ্ছে। দামে সাশ্রয়ী এবং নিম্ন ও মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যে থাকায় অনেকেই ফুটপাতে কেনাকাটায় আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। ফুটপাতের পাশাপাশি বিপণিবিতান ও শপিং মলগুলোতে উপচে ভিড় ছিল। আজ শুক্রবার সকাল থেকে রাত আটটা পর্যন্ত এ চিত্র দেখা যায়।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, নগরের চাষাঢ়া হকার্স মার্কেট, বি বি রোডের সমবায় মার্কেট, পানোরামা প্লাজা, সায়াম প্লাজা, জাকির সুপার মার্কেট, সাধু পৌলের গির্জা, শায়েস্তা খান সড়ক, উকিলপাড়া, ২ নম্বর রেলগেট, ডিআইটি বাণিজ্যক এলাকার সড়কের দুই পাশের ফুটপাতগুলোতে ঈদের পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন হকাররা। ফুটপাতের দোকানগুলোতে ছেলে-মেয়েদের রেডিমেড থ্রি–পিছ, টু-পিছ, ফ্রগ, জুতা, হাতব্যাগ, ওড়না, কসমেটিকস, চুড়ি, অন্তর্বাসসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য বিক্রি হচ্ছে। সকাল থেকে গভীর রাত অবধি ফুটপাতগুলোতে কেনাকাটা হচ্ছে। শিশু, নারী-পুরুষসহ সব শ্রেণির মানুষ কেনাকাটা করতে ফুটপাতে ভিড় করছেন।

দুই ছেলেকে নিয়ে নগরের বি বি রোডের ফুটপাতে কেনাকাটা করতে এসেছেন গৃহিণী আসমা রহমান। তাঁর বাড়ি সদর উপজেলার ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকায়। তাঁর স্বামী পেশায় পোশাককর্মী। ফুটপাতের দোকান থেকে দুই ছেলের জন্য রেডিমেড শার্ট ও প্যান্ট কিনেছেন তিনি। আসমা রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সংসার খরচ সামলিয়ে ঈদের কেনাকাটা করা আমাদের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। তবুও কম বাজেটের মধ্যে কেনাকাটায় আমাদের ফুটপাতই ভরসা। প্রতিবছর ফুটপাত থেকে ঈদের কেনাকাটা করি। ঈদে নতুন পোশাক কিনে দেওয়ায় ছেলেরাও অনেক খুশি।’

অপর ক্রেতা ইয়াসমিন আক্তার তাঁর মেয়ের জন্য জামা কিনতে এসেছেন। দামাদামি করে ফুটপাত থেকে দেড় হাজার টাকা দিয়ে জামা কিনেছেন তিনি। ইয়াসমিন বলেন, ‘বিপণিবিতানগুলোতে বাড়তি দামের কারণে অনেকের পক্ষে সেখান থেকে কেনাকাটা করা সম্ভব হয় না। রোজায় এমনিতেই সংসার খরচ বেড়েছে। কোনোমতে ঈদটাকে পার করা। আর ফুটপাতে পোশাকের দামও কম।’

শহরের পানোরামা প্লাজার সামনে ফুটপাতে জুতা বিক্রি করছেন আল আমিন। শিশু ও বড়দের সব ধরনের জুতা বিক্রি করেন তিনি। লেডিস স্লিপার, শর্ট হিল, মিডিয়াম হিল, বুস্টনসহ বিভিন্ন ধরনের জুতা বিক্রি করেন তিনি। প্রতি জোড়া জুতা ৩০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, ঈদের বেচাকেনা ভালো হচ্ছে। প্রচুর ক্রেতার ভিড় আছে। তবে দামাদামি করছেন ক্রেতারা।

শহরের চাষাঢ়া হর্কাস মার্কেটে দোকান রয়েছে প্রায় অর্ধশতাধিক। সেখানে ছেলেদের টি-শার্ট, প্যান্ট, পায়জামা-পাঞ্জাবি, ফতুয়া, পলো শার্ট, মেয়েদের বিভিন্ন ধরনের জামা, শিশুদের শার্ট, প্যান্ট, জুতাসহ বিভিন্ন ধরনের আইটেম বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ী আব্বাস মিয়া জানান, আজ বন্ধের দিন থাকায় ঈদে বেচাকেনা ভালো হচ্ছে। দামে সস্তা থাকায় অনেকেই পোশাক কিনতে হকার্স মার্কেটে ভিড় করেন। চাঁদরাত পর্যন্ত হবে বলে তিনি জানান।

ঢাকার কেরানীগঞ্জের কাউন্টালের বাসিন্দা হকার সুকুমার শিশুদের হাতব্যাগ ও পার্স ব্যাগ বিক্রি করেন। প্রতিটি ১৫০ টাকায় বিক্রি করেন। রাজধানীর চকবাজার থেকে এসব পণ্য কিনে এনেছেন তিনি। সুকুমার বলেন, এবারের ঈদে ব্যবসার জন্য সুদে ২০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়েছেন। বেচাকেনা ভালো হচ্ছে।

ক্রেতারা বলছেন, গত বছরের চেয়ে এবার সব ধরনের পোশাকের দাম বেশি। এ জন্য তাঁদের ঈদ বাজেটে কাটছাঁট করতে হচ্ছে। তবে দাম বেশি প্রসঙ্গে দোকানিরা জানান, পোশাকসহ সব ধরনের পণ্যের উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় পাইকারিভাবে তাঁদেরকে বেশি দামে কিনতে হয়েছে। তাই পোশাকপ্রতি গত বছরের তুলনায় ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা বেড়েছে। তবুও মানুষ ফুটপাত থেকে সাশ্রয়ী দামে পোশাক কিনতে পারছেন বলে তিনি জানান।