পাঁচ আগষ্টের নজিরবিহীন উল্লাস জনতা
নারায়ণগঞ্জে পাঁচ আগষ্টের দিন নজিরবিহীন এক ঘটনার সাক্ষী হয় নারায়ণগঞ্জ। বছরের সবচেয়ে আলোচিত দিন ছিল এটি। ঘটনাবহুল এ দিনে শহরের পরিস্থিতির নাটকীয় পরিবর্তন ঘটতে দেখা গেছে।
পাঁচ আগষ্ট সকাল থেকে নারায়ণগঞ্জ শহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। আন্দোলনকারীদের ঠেকাতে শহরের চাষাঢ়া ও আশেপাশের এলাকায় অবস্থান নেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। রুপায়ন টাওয়ারে অয়ন ওসমানের কার্যালয়ে সকাল থেকেই জড়ো হতে দেখা গেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের।
সকাল দশটার দিকে ঢাকার অভিমুখে লংমার্চে যোগ দিতে জড়ে হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে চাষাঢ়া এলাকায় পুলিশের সাথে সংঘর্ষ বাধে শিক্ষার্থীদের। এসময় চাষাঢ়া গোল চত্বর এলাকা থেকে তিন দিকে জড়ো হওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর গুলিবর্ষণ করতে থাকে পুলিশ।
সকাল এগারোটার দিকে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এসময় সংঘর্ষে চাষাঢ়া এলাকা রণক্ষেত্রে পরিনত হয়।
এদিকে দুপুর বারোটার পর থেকে দৃশ্যপট পাল্টে যেতে শুরু করে। দুপুরের আগেই চাষাঢ়া ত্যাগ করে পুলিশ। এক পর্যায়ে ছাত্র জনতার প্রতিরোধের মুখে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরাও পালাতে বাধ্য হয়। দুপুরে সেনাপ্রধানের জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণের খবর পাওয়ার পর শহরের আশেপাশের এলাকা থেকে চাষাঢ়ার দিকে লোকজন আসতে শুরু করে।
দুপুর আড়াইটার দিকে খবর ছড়িয়ে পড়ে শেখ হাসিনা পালিয়েছেন। এই সময় পর্যন্ত চাষাঢ়ার আশেপাশের এলাকায় অবস্থান করছিলেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তবে সরকার পতানের খবর পাওয়ার পর সকলে শহর ত্যাগ করতে থাকেন।
এদিকে সরকারের পতনের খবর পাওয়ার পর আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগেই চাষাঢ়া এলাকা জনসমুদ্রে পরিনত হয়। এসময় জাতীয় পতাকা হাতে বিজয় উল্লাস করতে দেখা গেছে। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি প্রায় সকল শ্রেনী পেশার মানুষ এদিন রাজপথে নেমে আসে অদ্ভুত এই বিজয়ের সাক্ষী হতে। রাত পর্যন্ত মানুষের উল্লাস ও আনন্দ মিছিলে মুখরিত থাকে নারায়ণগঞ্জ। স্বাধীনতার পর এমন বিজয় উল্লাস দেখেনি নারায়ণগঞ্জ।