মন্দির পাহাড়া
নারায়ণগঞ্জে পাঁচ আগষ্টের পর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট রাখতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ রাজনৈতিক দলগুলোর তৎপরতা ছিল চেখে পড়ার মত। আওয়ামী লীগের পতনের পর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় এসকল রাজনৈতিক দলের ভূমিকা ছিল বছরের অন্যতম আলোচিত ঘটনা।
পাঁচ আগষ্ট ছাত্র জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশব্যাপী পরাজিত শক্তি সংখ্যালঘুদের টার্গেট করতে পারে বলে ধারণা করছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা। দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে সাম্প্রদায়িক হামলার আশংকা থেকে পাঁচ তারিখ সন্ধ্যা থেকেই নারায়ণগঞ্জ শহরের মন্দিরগুলোতে পাহাড়া বসান ছাত্রদল, যুবদলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।
নারায়ণগঞ্জ শহরের বাইরেও রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার, সোনারগাঁয়েও মন্দির পাহাড়া দেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। ইসলামিক দল ও মাদ্রাসা ছাত্ররাও বিভিন্ন হিন্দু এলাকায় বাড়িঘর ও ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে পাহাড়া দেন।
মূলত পাঁচ আগষ্টের পর নারায়ণগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়ে। এমন অবস্থায় পরাজিত শক্তি সংখ্যালঘুদের ঘিরে যেন কোন ষড়যন্ত্র করতে না পারে সেই উদ্দ্যেশ্যে এমন উদ্যোগ নেন তারা।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু এ বিষয়ে বলেন, হিন্দুরা আমাদের ভাই। এদেশে আমরা কাউকে ধর্ম দিয়ে বিচার করি না। যে যেই ধর্মেরই হোক আমরা সকলকে বাংলাদেশের নাগরিক, বাংলাদেশী হিসেবে বিবেচনা করি। আমাদের চোখে সবাই সমান, সকলের সমান অধিকার। আমার যতটুকু অধিকার, হিন্দু ভাইয়েরও ততটুকু অধিকার। ফ্যাসিস্টরা যেন দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে না পারে সেই উদ্দ্যেশ্যে আমরা পাঁচ তারিখের পর থেকে নিয়মিত তাদের বাড়িঘর, ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয় পাহাড়া দিয়েছি।
এদিকে নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুরো আগষ্ট মাসজুড়েই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয় ও বাড়িঘরে এই পাহাড়া চলতে থাকে। শারদীয় দূর্গা পূজায়ও এই পাহাড়া ছিল চোখে পড়ার মত। পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নিরাপত্তার দায়িত্ব নেন তারা।