প্রতীকী ছবি
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক অসুস্থ শিশুকে সহায়তার আবেদন দেখে এগিয়ে আসেন বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) সভানেত্রী জীশান মীর্জা।
অসুস্থ শিশুর পিতাকে চিকিৎসাপত্রসহ সহায়তা নিতে আহ্বান জানান তিনি।
কিন্তু সহায়তা নিতে কেউ না আসায় এবং পরবর্তীকালে একই ছবি দিয়ে ফেসবুকে আরেকটি পোস্ট দেখে সন্দেহ হয় পুনাক সভানেত্রীর।
এ অবস্থায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের কাছে বিষয়টি খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানায় পুনাক।
এরপর সিটিটিসির অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে সহায়তা চাওয়ার নামে প্রতারণার খবর। সাহায্যপ্রার্থীরা মূলত ফেসবুকে দুস্থ ও অসহায়দের সাহায্যর নামে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিলেন। মানুষের আবেগের সঙ্গে প্রতারণা করে ইতোমধ্যে প্রায় ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই প্রতারক চক্র।
তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রংপুর থেকে তিনজন ও ঢাকার মিরপুর থেকে একজনকে গ্রেফতার করে সিসিটিসির সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। গ্রেফতাররা হলেন- মো. রেজাউল ইসলাম, মো. হাফিজুল ইসলাম, মো. মেহেদী হাসান ওরফে আকাশ ও মো. তানভীর আহাম্মেদ।
এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ২৭টি ফেসবুক আইডি, ১০টি মোবাইল, ১৫টি সিম কার্ড ও নগদ ২ লাখ টাকা উদ্ধার ও জব্দ করা হয়।
সিটিটিসির সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের ইন্টারনেট রেফারেল টিমের সহকারী কমিশনার (এসি) ধ্রুব জ্যোতির্ময় গোপ বাংলানিউজকে বলেন, প্রতারক চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন অসুস্থ ব্যক্তিদের ছবি সংগ্রহ ও ব্যবহার করে ফেসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে প্রতারণা করে আসছিল। এরকম একটি ভুয়া অ্যাকাউন্টের নাম মো. জুয়েল রানা। ওই ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট থেকে ফেসবুক গ্রুপ ‘নক্সে বন্দী হাসানুর রহমান হোসাইন সাইবার টিম’-এ অসুস্থ একটি শিশুর ছবি শেয়ার করা হয়।
‘বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী বিশ্বাস’ নামের অপর একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ‘আমরা বৃহত্তর পুরান ঢাকাবাসী’ গ্রুপসহ প্রায় ২৭টি অ্যাকাউন্ট থেকে আরো বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে সাহায্যের আবেদন করা হয়। সাধারণ মানুষের আবেগের সঙ্গে প্রতারণা করে এই প্রতারক চক্রটি প্রায় ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানান ধ্রুব জ্যোতির্ময় গোপ।
গ্রেফতারদের রমনা মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা একটি মামলায় রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতে পাঠানো হয়েছে।