শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

|

বৈশাখ ৫ ১৪৩২

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

প্রধান উপদেষ্টার নাম ভাঙ্গিয়ে সোনারগাঁয়ে মৎস্য কর্মকতার পিয়নের বিরুদ্ধে অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ২১:৪১, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

প্রধান উপদেষ্টার নাম ভাঙ্গিয়ে সোনারগাঁয়ে মৎস্য কর্মকতার পিয়নের বিরুদ্ধে অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মাহবুব আলম সুমন নামের মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের এক পিয়নের বিরুদ্ধ প্রতারনার মাধ্যমে অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। 

বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে ভূক্তভোগীরা প্রতিকার চেয়ে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমানের কাছে পৃথক তিনটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বিভিন্ন সরকারী অনুদানের কথা বলে ও প্রধান উপদেষ্টার নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন গ্রামের গিয়ে তাদের কাছ থেকে এ টাকা অভিযুক্ত হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন।

অভিযোগকারীরা হলেন, সনমান্দি ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের নুরউদ্দিনের মেয়ে স্বর্ণা আক্তার, একই ইউনিয়নের গিরদান গ্রামের তোফাজ্জল  হোসেনের মেয়ে তাসলিমা বেগম, ও নাজিরপুর গ্রামের মুকবিল হোসেনের ছেলে জনি মিয়া। 

অভিযোগ থেকে জানা যায়, সোনারগাঁ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তারের কার্যালয়ের পিয়ন অভিযুক্ত মাহবুব আলম সুমন সনমান্দি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দাদের কাছ থেকে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস দরিদ্র অসহায়দের নগদ দুই লাখ করে টাকা অর্থ সহায়তা দেবেন বলে প্রচার করেন। সেই অর্থ পেতে দারিদ্র বিমোচন কর্মসংস্থান ব্যাংকে ৬ হাজার টাকা করে জমা দিতে হবে বলে জানিয়েছেন। পিওন সুমনের কথা বিশ্বাস করে ওই ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের শতাধিক মানুষ তাকে ৬ হাজার টাকা করে ব্যাংকে দেওয়ার জন্য দিয়েছেন। তবে ওই টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার নাম করে তিনি আবেদনকারীদের মোবাইল ফোনে সান্তনা এসএমএস দিয়েছেন। সেখানে লিখা রয়েছে আপনার একাউন্টে পাঁচ হাজার টাকা জমা হয়েছে। তবে বিষয়টি আবেদনকারীদের সন্দেহ হলে দারিদ্র বিমোচন কর্মসংস্থান ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেখানে তাদের নামে কোন একাউন্ট নেই। তাছাড়া সেখানে কোন প্রকার টাকা পয়সা জমা হয়নি।  

অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, প্রধান উপদেষ্টার অনুদানের কথা বলে নগদ টাকা ছাড়াও সরকারি ঘর পাইয়ে  দেওয়ার কথা বলে প্রায় ৩২ জনের কাছ থেকে তিনি এক থেকে দেড় লাখ, দুধ দেয়া গাভী দেয়ার আশ্বাস দিয়ে ২৬ জনের কাছ পঞ্চাশ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছেন। এছাড়াও মাতৃকালিন ভাতা, বিধবা ভাতা,বয়স্ক ভাতা,খাদ্য ভাতার পাইয়ে দেওয়ার জন্যেও টাকা নিয়েছেন। 

ভূক্তভোগী স্বর্ণা আক্তার জানান, তারা গরীব মানুষ। মাহবুব আলম সুমন মৎসকর্মকর্তার পরিচয়ে প্রধান উপদেষ্টার অনুদান দেওয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়েছেন। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন।  

সনমান্দী ইউনিউনের আরেক ভুক্তভোগী তাছলিমা বেগম জানান, তাদের এলাকার অনেকের থেকেই বাড়ি ও গাভী দিবে বলে এক থেকে দেড় লাখ টাকা টাকা নিয়েছেন। অফিসে এসে জানতে পেরেছি তিনি আমাদের সাথে প্রতারণা করে টাকা নিয়েছেন। 

অভিযুক্ত পিওন মাহবুব আলম সুমনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। তাকে ক্ষুদে বার্তা দেওয়া হলেও কোন উত্তর আসেনি। 

সোনারগাঁ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার বলেন, এবিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে তাকে শোকজ করা হয়েছে। তদন্তে সত্যতা পেলে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান বলেন ,আমার কাছে ভূক্তভোগীরা অভিযোগ দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।