শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

|

পৌষ ৬ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

মুদি দোকানেই গ্যাস সিলিন্ডার ডিজেল পেট্রোল অকটেন!

বিশেষ প্রতিনিধি, আড়াইহাজার

প্রকাশিত: ১১:২৫, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

আপডেট: ১১:২৬, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

মুদি দোকানেই গ্যাস সিলিন্ডার ডিজেল পেট্রোল অকটেন!

মুদি দোকান

কি নেই মুদি দোকানে! গ্যাস সিলিন্ডারতো স্বাভাবিক জিনিস হয়ে গেছে। আরো পাওয়া যায় ডিজেল, পেট্রোল ও অকটেন। আড়াইহাজার সদর সহ পুরো উপজেলায় একই চিত্র। প্রশাসনের নাকের ডগাতেই এতসব কান্ড ঘটছে। তাদের নজরে আসছেনা কিছুই। আল্লাহপাক না করুক বড় ধরনের কোন দূর্ঘটনা ঘটে গেলে-কি হবে ? উপজেলার সর্বত্র আইন লংঘন করার চিত্র চোখে পড়ে। পত্রিকায় কোন বিষয় হাইলাইট করলে হঠাৎ একটি বা দু’টি অভিযানেই দায়িত্ব সম্পন্ন করে প্রশাসন। এরপর ফের একই ঘটনা দৃশ্যমান হয়।

আড়াইহাজারের সুধীজনদের অনেকেই মনে করেন, গ্যাস সিলিন্ডার ও তিন প্রকারের জ্বালানি তেলকে মুদি দোকান বা পাইকারী পণ্যের দোকানদাররা সহজলভ্য মনে করেই বিক্রি করছেন। এতে করে যে কোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে-সে দিকটা কেউ ভাবেন না। স্থানীয় প্রশাসন সারাবছর বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত থাকেন। জনগুরুত্বপূর্ণ এমন ইস্যুগুলো তাদের নজরে আসে না।

কয়েকজন মুদি দোকানীর ভাষ্য, আমি একা এই কাজটি করিনা। বাজারের সবাই করে। আমি সিলিন্ডার দোকানে না রাখলে আমার নিয়মিত কাস্টমার ছুটে যাবে। সবাই যদি গ্যাস সিলিন্ডার ও ডিজেল, পেট্রোল ও অকটেন দোকানে না রাখে, তাহলে আমিও রাখবোনা। 

মুদি দোকানদাররা আরো জানান, আড়াইহাজার উপজেলার ২ টি পৌরসভা ও ১০ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন হাটবাজারের বড় বড় মুদি দোকানগুলিতে গ্যাস সিলিন্ডার ও জ¦ালানী তেল বিক্রি করা হয়।

খোঁজ নিয়ে এবং সরেজমিনে দেখাগেছে, আড়াইহাজার সদর বাজার, কালিবাড়ি, বান্টিবাজার, বালিয়াপাড়া, প্রভাকরদী বাজার, দিঘলদি বাজার, পাঁচগাও, সাতগ্রামের পাঁচরুখিবাজার,  মারুয়াদী, বগাদি, তিলচন্ডি, সুলতানসাদি, জাঙ্গালিয়া, উচিৎপুরা, রামচন্দ্রদী, গোপালদীবাজার, বিশনন্দি, মানিকপুর, বঙ্গারবাজার, খাগকান্দা ও মেঘনা নদীর ওপারে কালাপাহাড়িয়া এলাকাতেও একই চিত্র।

নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে অবৈধ ভাবে বিক্রি হচ্ছে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার এবং পেট্রোল। অধিকাংশ বিক্রেতার নেই কোনো বিস্ফোরক লাইসেন্স। চাল, ইলেকট্রনিক্স, মোবাইল, হার্ডওয়্যার, পান, বিড়ি, মুদি দোকানসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং আবাসিক এলাকায় এলপি গ্যাস সিলিন্ডার মজুত করে সবাই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন নির্বিঘ্নে। আর রাস্তার পাশে টেবিলে কন্টেইনারে রেখে বিক্রি হচ্ছে পেট্রোল, অকটেন এবং ডিজেল।

আর এ ব্যবসা ছড়িয়ে পড়েছে পুরো আড়াইহাজারে। অথচ নিয়ম অনুযায়ী এলপি গ্যাস ব্যবহার, বিপণন ও বাজারজাত করতে হলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসায়ীকে বিস্ফোরক অধিদফতরের লাইসেন্স ও অগ্নিনির্বাপক গ্যাস সিলিন্ডার বাধ্যতামূলক সংরক্ষণ করার কথা। সরকারি নিয়ম-নীতি তোয়াক্কা না করে অন্য পণ্যের পাশাপাশি বিক্রি করা হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে সড়কের পাশে দোকানের ভেতরে কনটেইনারে পুরে রাখা হয় পেট্রোল,অকটেন,ডিজেল এবং এলপি গ্যাস সিলিন্ডার।

দোকানের সামনে রেখেই বিক্রি হচ্ছে এই সব সামগ্রী। জ্বালানি তেল বিক্রির লাইসেন্স পেতে কমপক্ষে পাকামেঝে সহ আধাপাকা ঘর ও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র থাকতে হবে। মজবুত ও ঝুঁকিমুক্ত সংরক্ষণাগার থাকার সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু এসবের কোনো তোয়াক্কা না করে উপজেলার প্রত্যেকটা হাটেবাজারে বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মুদিখানা, বস্তাসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্যের সাথে জ্বালানি তেল পেট্রোল,অকটেন,ডিজেল এবং এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে। এতে বিক্রেতাদের যেমন লিটার প্রতি সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে ক্রয় করতে হচ্ছে তেমনি ক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

বিভিন্ন বাজারসহ  হাটবাজার ঘুরে দেখা গেছে শতাধিক দোকানে এভাবে বিক্রি হচ্ছে এই জ্বালানি পদার্থ। দোকানে আধা লিটার,এক লিটার,অথবা দুই লিটার ওজনের প্লাস্টিকের বোতলে পেট্রোল,অকটেন,ডিজেল ভরে দোকানিরা দোকানের সামনে টেবিল অথবা ব্যারেলের ওপর সাজিয়ে রাখে বিক্রয় করছে। যে কেউ ইচ্ছা করলেই বোতল ভর্তি পেট্রোল,অকটেন,ডিজেল কিনতে পারেন।