বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

|

অগ্রাহায়ণ ৬ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

ঈদ ঘিরে জমে উঠছে জামদানি পল্লী, অর্ধশত কোটি টাকা বিক্রির আশা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১৭:৩৫, ২৪ মার্চ ২০২৪

আপডেট: ২১:৪২, ৬ এপ্রিল ২০২৪

ঈদ ঘিরে জমে উঠছে জামদানি পল্লী, অর্ধশত কোটি টাকা বিক্রির আশা

ফাইল ছবি

দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদুল ফিতর। মুসলিমদের বড় এ ধর্মীয় উৎসবকে কেন্দ্র করে ব্যস্ত সময় পার করছেন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের জামদানি পল্লীর কারিগর ও ব্যবসায়ীরা।

মিহি জমিনে সূক্ষ্ম নকশাদার কাজ দিয়ে তৈরি হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী জামদানি শাড়ি। এ শাড়ির চাহিদা শুধু দেশে নয়, বিদেশেও। সেই চাহিদাকে মাথায় রেখে কারিগররা নানা রং-বেরঙের নজরকাড়া ডিজাইনের শাড়ি তৈরি ও বেচা-কেনা হচ্ছে। দম ফেলার যেন ফুরসত পাচ্ছেন না কারিগর ও ব্যবসায়ীরা।

এদিকে প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে এ ব্যস্ততা চলে রাত ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত। এবারের ঈদে ৫০ থেকে ৭০ কোটি টাকার শাড়ি বেচাকেনা হবে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টরা।  

তারা বলেন, নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী মূল্যের কারণে ক্রেতারা বস্ত্রের চেয়ে গুরুত্ব বেশি দিচ্ছেন খাদ্য দ্রব্যে। ফলে বেচা বিক্রিতে গতবছরের তুলনায় একটু ভাটা পড়েছে। তা না হলে বেচা বিক্রি শত কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতো। এখন পর্যন্ত বেচা বিক্রি পুরোপুরি জমে উঠেনি। এবছর ধীর গতিতে বা আস্তে আস্তে বেচা বিক্রি জমে উঠছে। ইতোমধ্যে পাইকারি বেচা-বিক্রি শেষ হয়েছে। এখন খুচরা বিক্রি হচ্ছে। বেতন-বোনাস হওয়ার পর আগামী ২০ রমজানের পর ব্যবসা পুরোদমে জমবে বলে প্রত্যাশা ব্যবসায়ীদের।

শনিবার (২৩ মার্চ) নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের নোয়াপাড়া বিসিক জামদানি শিল্প নগরীর ব্যবসায়ী ও জামদানি তৈরির কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ব্যস্ত সময় পার করছেন জামদানি শিল্পীরা।  

বিসিক জামদানি পল্লী ঘুরে উৎসবের কর্মব্যস্ততা দেখা গেছে। তাঁতিরা দিনরাত লাল, নীল, হলুদ বেগুনিসহ নানান রঙের মিশ্রণে সূক্ষ্ম সুতায় ঐতিহ্যের নকশা বুনছেন। মাকু আর কান্ডুলেফোঁড়ে বিভিন্ন ধরনের জামদানি শাড়িতে ময়ূরপ্যাঁচপাড়, বাঘনলি, কলমিলতা, চন্দপাড়, ঝুমকাণ্ড, তেরছা, জলপাড়, পান্নাহাজার, করোলা, দুবলাজাল, সাবুরগা, বলিহার, শাপলা ফুল, আঙ্গুরলতা ইত্যাদি নকশা ফুঁটিয়ে তুলছে কারিগররা। একটা জামদানি শাড়ি বুনতে দুইজন কারিগর লাগে। সহযোগীকে সপ্তাহে আড়াই হাজার টাকা দিতে হয়, এরপর সুতা ও কারখানার খরচ বাদ দেওয়ার পর মূল কারিগরের খরচ ধরা হয়। শাড়িতে সুতার দামে তেমন কোনো পার্থক্য হয় না। শাড়ি বুঝে ৬০০ থেকে তিন হাজার টাকার সুতা লাগে। শাড়ির দাম মূলত মজুরিতে। নজরকাড়া ডিজাইন ও সুতার কাউন্টের ওপর ভিত্তি করে শাড়ির দাম কম-বেশি হয়ে থাকে। যে কাপড়ের সুতার কাউন্ট যত বেশি দামও তত বেশি। সুতার এ কাউন্টের ওপর শাড়ি বোনার সময় নির্ভর করে। বিসিক জামদানি শিল্প নগরীতে প্রতিটি জামদানি শাড়ি ১ এক হাজার ২০০ টাকা থেকে শুরু করে দুই লাখ টাকায় পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে। 

এ বিষয়ে বিসিক জামদানি পল্লীর ২ নম্বর গলির সেলিম জামদানি ওয়েভিং ফ্যাক্টরিতে কথা হয় জামদানিশিল্পী আলী মোহাম্মদের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকার দোকানগুলোতে মূলত তারা জামদানি সরবরাহ করেন। সারা বছরই কাপড়ের চাহিদা থাকে। ঈদের আগে সেই চাহিদা কিছুটা বেড়েছে। ৮০ কাউন্টের একটি শাড়ি বুনতে যেখানে ১৫ দিন সময় লাগে, সেখানে তারা বাড়তি সময় দিয়ে ১৩ দিনে শেষ করছেন। কারণ তাদের হাতে অনেক অর্ডার রয়েছে। ঈদের আগেই সেগুলো ছাড়তে হবে।

তিনি বলেন, জামদানির বিভিন্ন কোয়ালিটি রয়েছে। নিম্ন মানে ৪০ কাউন্টের শাড়ি এক হাজার থেকে দুই হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে। ৬০ থেকে ৮০ কাউন্টের শাড়ি বেশি চলে। এর দাম চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। মধ্যবিত্তদের দাম ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু, সেটা ৮৪ কাউন্টের শাড়ি। এরপর যত বেশি কাজ তত বেশি দাম হবে। এখন অনলাইনে বেচা কেনা হয় বেশি।

বিসিক জামদানি শিল্প নগরিতে কথা হয় রূপগঞ্জের কাহিনা গ্রামের জামদানির কারিগর মো. মনুমিয়ার সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ঈদ, পহেলা বৈশাখ ও পূজার আগে ব্যস্ততা বেশি থাকে। এবারও প্রচুর কাজ পেয়েছি। দম ফেলার সময় পাচ্ছি না। চারটা শাড়ি নিয়ে আসছিলাম। আব্দুল্লাহ জামদানি ঘরে দিয়ে গেলাম। আরও কতগুলো শাড়ির অর্ডার রয়েছে।

তিনি বলেন, কটন ও রেশমি সুতা দিয়ে পুরোপুরি হাতে তৈরি হয় জামদানি শাড়ির কাপড়। এ কারণে অন্য কাপড়ের তুলনায় জামদানি কাপড়ের দাম বেশি হয়ে থাকে। যে কাপড়ে যত বেশি কাজ, সে কাপড়ের দাম তত বেশি হয়ে থাকে এবং তৈরি করতে সময় বেশি লাগে। পাঁচ হাজার থেকে সাত হাজার টাকার পাতলা শাড়ি সপ্তাহে দুইটা, ১০ থেকে ১২ হাজার টাকার শাড়ি ১৪ ঘণ্টা করে কাজ করলে সপ্তাহে একটা এবং এর ওপরের শাড়ি কাজের ওপর নির্ভর করে দুই মাসে একটা শাড়ি তৈরি হয়। ঈদ, বৈশাখ ও পূজার আগে মূলত শাড়ির চাহিদা ও দাম বাড়ে। এজন্য দুই মাস কারিগররা কাজে মনোযোগী হয় বেশি।

এবিষয়ে জামদানি পল্লীর সোহাগ জামদানি ঘরের মালিক মো. নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এখন মানুষ জামদানি সম্পর্কে জানে। দেশের ঐতিহ্য হিসেবে হলোও এখন একজন জামদানি কিনে নেয়। রোজায়, পূজা ও বৈশাখ এ তিন সময়ে চাহিদা বেশি থাকে। সারা বছর যা বেচা বিক্রি হয় তার ডাবল হয় এসময়। প্রত্যেক ঈদের মৌসুমে প্রায় ৬০-৭০ লাখ টাকার শাড়ি অনায়াসে বিক্রি হয়ে থাকে। তবে এবার ঈদে এখনও আশানুরূপ ব্যবসা জমে ওঠেনি। তবে ঈদের আরও বেশ কিছুদিন বাকি আছে। ঈদের আগে বিক্রি বাড়বে, সেই প্রত্যাশায় রয়েছি। আশা করছি ঈদ ও বৈশাখ মিলিয়ে আমাদের বেচা-বিক্রি কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

বহির্বিশ্বে জামদানি শাড়ির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমেরিকা, ইংল্যান্ড, ভারতসহ অনেক দেশে এ শাড়ির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সেসব দেশে আমাদের শাড়ি বিক্রি হচ্ছে। আমার দোকানে সাড়ে তিন হাজার থেকে শুরু করে দেড় লাখ টাকা দামের শাড়ি রয়েছে। এছাড়া থ্রি-পিস এক হাজার ২০০ টাকা থেকে শুরু করে তিন হাজার টাকা এবং পাঞ্জাবি এক হাজার টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দামের রয়েছে। 

দক্ষিণ রূপসীর বিসিক জামদানি পল্লীর পশ্চিম ১০ নম্বর রোডের আব্দুল্লাহ জামদানি উইভিং ফ্যাক্টরির মালিক মো. আব্দুল্লাহ মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ৩০ বছর ধরে এ জামদানির সঙ্গে জড়িত। প্রথমে সহযোগী কারিগর ছিলাম বর্তমানে জামদানি ঘরের মালিক। গত ১০ বছর ধরে জামদানির ব্যবসা করছি। দিন দিন জামদানি শাড়ির চাহিদা বাড়ছে। আসছে নতুন নতুন ডিজাইন। এখন প্রতিযোগিতার বাজার, যে যত নতুন ও আধুনিক ডিজাইন নিয়ে আসতে পারবে সে তত এগিয়ে যাবে। একই সঙ্গে আধুনিক প্ল্যাটফর্মের (অনলাইন) মাধ্যমেও আমরা শাড়ি বিক্রি করছি।

তিনি বলেন, সারা বছরের মধ্যে দুইটা মৌসুম আমরা পাই। একটা ঈদুল ফিতর, বৈশাখ ও দুর্গাপূজা। রমজান শুরুর এক মাস আগের থেকেই বেচা কেনা শুরু হয়। ১৫ রমজান পর্যন্ত মোটামুটি হয়। এরপর ঈদের আগে টুকটাক হয়। কারণ আমরা হোলসেল ব্যবসা করি। ঈদের আগে খুচরা ক্রেতাদের চাহিদা বেশি থাকে। এবছর বেচা কেনা মোটামুটি গতবছরের তুলনায় ভালো। গতবছর আর্থিক মন্দা ছিল। এবছর সেটা কাটিয়ে উঠলেও দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য আশানুরূপ বেচা কেনা হচ্ছে না। আমাদের প্রত্যাশা ছিল অনেক বেশি। এবছর আশা করছি ঈদ ও বৈশাখ মিলিয়ে প্রায় কোটি টাকার জামদানি বিক্রি করতে পারবো।

আগের তুলনায় জামদানির চাহিদা অনেক বেড়েছে জানিয়ে আব্দুল্লাহ মিয়া বলেন, জামদানি জিআই পণ্য ঘোষণার পর থেকেই ব্যাপক প্রচার হয়। সে কারণে চাহিদা বাড়ছে। আরেকটা বিষয় হলো করোনাকালে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম হওয়ার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা চলেছে। তার সুফল হিসেবে আমাদের বেচা কেনা অনেক বেড়েছে। আমাদের সরাসরি বেচা কেনার থেকে অনলাইনে বেশি বেচা-কেনা হচ্ছে। আমরা এখন কুরিয়ারের মাধ্যমে দেশ ও বিদেশে জামদানি শাড়ি পাঠিয়ে থাকি। আর আমাদের কাছে অরজিনাল জামদানি পাওয়ায় ক্রেতারাও খুশি।

অভিযোগ করে তিনি বলেন, আমাদের বিসিক শিল্প নগরী বা জামদানি পল্লীর অবকাঠামো উন্নয়ন দরকার। বাহির থেকে যেসব গ্রাহক আসে তারা গাড়ি নিয়ে ঢুকতে পারে না। ভেতরের রাস্তাগুলোর অবস্থা বেহাল। একটু বৃষ্টি হলেই পানি কাঁদা জমে যায়। চলাচল করা যায় না। অফিসে বার বার অভিযোগ করা হয়েছে। লোকজন আসে দেখে চলে যায়। কিন্তু কোনো কাজ হয় না।

মৌসুমি জামদানি ঘরের মালিক মো. জিয়াউল হক বাংলানিউজকে বলেন, আমি জামদানি পরিবারের সন্তান। করোনার পর থেকে জামদানির ব্যবসা ভালো। চাহিদা ভালো। এখন অনলাইনে বেচা কেনা বেশি হচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে অনেকেই জামদানি শাড়ি চেনেন না। ইন্ডিয়ার মেশিনের তৈরি শাড়ি জামদানি বলে চালিয়ে দিচ্ছে। আসলে এটা জামদানি শাড়ি না। আসল জামদানি শাড়ি কিনতে হলে বিসিকে আসতে হবে। আমাদের জামদানি শাড়ি বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। ঈদকে কেন্দ্র করে আমাদের এখন নতুন নতুন কালেকশন তৈরি হচ্ছে। নতুন নতুন শাড়িও হচ্ছে। এখন পল্লীতে এলে ভালো শাড়ি পাওয়া যাবে। এবছর বেচা কেনা মোটামুটি।

তিনি বলেন, জামদানির কারিগরদের এখন দম ফেলার ফুরসত নেই। আগে তারা দৈনিক ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা কাজ করলেও এখন তারা ১৪ থেকে ১৬ ঘণ্টা কাজ করছেন। নোয়াপাড়ার বাইরে রূপগঞ্জের তারাব পৌরসভা, সোনারগাঁর সাদিপুর, কাঁচপুর, জামপুর ও সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জের গ্রামগুলোতেও চলছে তাঁতিদের কর্মব্যস্ততা। রঙিন সুতার সঙ্গে দক্ষ হাতের ছোঁয়ায় হরেক নকশায় শিল্পীরা তৈরি করছেন বাংলাদেশের প্রথম জিআই পণ্য ঐতিহ্যের জামদানি।

এদিকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জামদানি শাড়ি কিনতে পল্লীতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। নারায়ণগঞ্জ থেকে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে জামদানি শাড়ি কিনতে এসেছেন মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সামনে ঈদ ও পহেলা বৈশাখ। দুটি উৎসব তাই এবার কেনাকাটা এক সঙ্গেই করতে হচ্ছে। এজন্য স্ত্রী দামি একটা জামদানি নেবে বলে বিসিকে এসেছি। কিনতে আসছিলাম একটা এখন কেনা হলো পাঁচটা। এরমধ্যে একটা ১২ হাজার টাকা দামের আর বাকি চারটা কিনেছি পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকার মধ্যে। জামদানি আমাদের দেশের ঐতিহ্য সারা বিশ্বে এর চাহিদা রয়েছে। আর এ শাড়িতে আভিজাত্যের একটা বিষয় রয়েছে।

শরীয়তপুরের বাসিন্দা সোনিয়া আক্তার বিসিক জামদানি শিল্প নগরীতে শাশুড়িকে নিয়ে এসেছে ঈদের কেনাকাটা করতে। তিনি বাংলানিউজকে জানান, এবার পরিবারের সবাইকে জামদানি দেবে সেই চিন্তা ভাবনা থেকে মিডরেঞ্জের জামদানি কিনতে বিসিক শিল্পনগরীতে এসেছেন। জামদানি শাড়ির প্রতি আমার এক ধরনের দুর্বলতা রয়েছে। তা ছাড়া নজরকাড়া সব ডিজাইন দেখলে যে-কেউ এ শাড়ি কিনতে চাইবেন। পরিবারের দুই সদস্যকে শাড়ি কিনে দিয়েছি। বাকি সদস্যের জন্য ঘুরে ঘুরে শাড়ি দেখে পছন্দ করছি।

রূপগঞ্জ বিসিক জামদানি শিল্পনগরী কার্যালয়ের কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম বলেন, আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে জামদানির কারিগররা ব্যস্ত সময় পার করছেন। ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায়, নানা রঙ-বেরঙের শাড়ি দোকানে তুলেছেন। কারও বেচাকেনা বেশি হয়, কারও কম। সব মিলিয়ে কত বেচাকেনা হয় তার নির্দিষ্ট তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে ধারণা করা যায়, যাদের তাঁতের সংখ্যা বেশি তাদের ঈদুল ফিতর ও বৈশাখকে কেন্দ্র করে কোটি টাকার মতো শাড়ি বিক্রি হবে। এ ঈদে আমাদের ধারণা প্রায় ৫০ থেকে ৭০ কোটি টাকার বেচাকেনা হবে জামদানি পল্লীতে। প্রতি বছর প্রায় ২০০ কোটি টাকার বেচাকেনা হয় এ পল্লীতে।

প্রসঙ্গত, জামদানি পল্লীতে ৪০৭টি প্লট রয়েছে। আর প্রতি প্লটে কমপক্ষে চারটি করে তাঁত রয়েছে। সব মিলিয়ে তাদের প্রায় এক হাজার ৬২৮টি তাঁত রয়েছে। বর্তমানে জামদানি পল্লীতে প্রায় তিন হাজার ২০০ থেকে তিন হাজার ৫০০ তাঁতশিল্পী কাজ করছেন। তারা জামদানি শাড়ি তৈরির পাশাপাশি পাঞ্জাবি, থ্রি-পিস ও টু-পিস তৈরি করছেন। নিজ হাতেই তাদের সব কাজ করতে হয়। এখানে মেশিনের কোনো কাজ নেই।